এলো আবার ঈদ ফিরে এলো আবার ঈদ চলো ঈদগাহে (elo abar eid fire elo)

এলো আবার ঈদ ফিরে এলো আবার ঈদ চলো ঈদগাহে।
যাহার আশায় চোখে মোদের ছিল না রে নিদ চলো ঈদগাহে॥
শিয়া সুন্নী লা-মজ্‌হাবী একই জামাতে
এই ঈদ মোবারকে মিলিবে এক সাথে,
ভাই পাবে ভাইকে বুকে, হাত মিলাবে হাতে;
আজ এক আকাশের নীচে মোদের একই সে মস্‌জিদ, চলো ঈদগাহে॥
ঈদ এনেছে দুনিয়াতে শির্‌নি বেহেশ্‌তী
দুশ্‌মনে আজ গলায় ধ‌'রে পাতাব ভাই দোস্তী,
জাকাত দেব ভোগ-বিলাস আজ গোস্‌সা ও বদ্‌মস্তি;
প্রাণের তশ্‌তরিতে ভ'রে বিলাব তৌহিদ-চলো ঈদগাহে॥
আজিকার এই ঈদের খুশি বিলাব সকলে,
আজের মত সবার সাথে মিল্‌ব গলে গলে,
আজের মত জীবন পথে চলব দলে দলে,
প্রীতি দিয়ে বিশ্ব-নিখিল করব রে মুরিদ্-চলো ঈদগাহে॥

  • ভাবসন্ধান: ইসলাম ধর্মমতে প্রতি হিজরি অব্দে দুটি ঈদ আসে। আনুষ্ঠানিকতার বিচারে দুটি ঈদ হলেও- সাধারণভাবে উভয় ঈদে- ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সাধারণ আনন্দোৎসবের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। এই আনন্দোৎসবের মহামিলন ক্ষেত্র হলো- ঈদগাহ। মূলত মহামিলনের জন্য এ গানে ঈদের দিনে ঈদগাহে বা মসজিদে মিলিত হওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে এই গানে।

    আবার ঈদ এসেছে এই আনন্দে মাতোয়ারা সবাই। সেই আনন্দোৎসাহে সবাইকে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ঈদগাহে (ঈদের নামাজ পড়ার মাঠ) জমায়েত হ‌ওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। এই ঈদের নামাজ তথা ঈদাগহে সবার সাথে মিলিত হওয়ার প্রতীক্ষায় নির্ঘুম রাত কেটেছে সবার।

    এই ঈদের জামাতে  শিয়া, সুন্নী, লা-মজ্‌হাবী (ইসলাম ধর্মের তিনটি শাখা)। এদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও ঈদগাহে তাঁরা একই জামাতে মিলিত হবেন এমনটাই কবি আশা করেন। ঈদগাহে তাঁরা সবাই সবাইকে ভাই বলে বুকে বুক মেলাবেন (আলিঙ্গন করবেন), হাতে হাত মেলাবেন। এর মধ্য দিয়ে শত্রুর গলা ধরে তাঁকে বন্ধুত্বের নিগড়ে আবদ্ধ করবেন। তাই একই আকাশের নিচে বিছানো ঈদের মাঠ বা মসজিদে নামাজের জন্য সবাইকে  আহবান করা হয়েছে।

    ইসলামের নির্ধারিত বিধিতে জাকাত দেবেন সবাই।  ভোগবিলাসে আজ রাগ দুঃখ অভিমান, বদমাইশি ভুলে প্রাণের তশ্‌তরিতে একেশ্বরী দর্শন বিলিয়ে দেবে সবাই। সবার সাথে মিলিত হয়ে এক সাথে ঈদের আনন্দে  উপভোগ করবেন সবাই। ঈদের এই মহামিলনের দর্শন শুধু ঈদের দিনের জন্য নয়, যেন সারা বছরের প্রতিদিন তা আদর্শ হিসেবে সবাই মান্য করুক- কবির ভাবনা এমনটা।  তিনি মনে করেন ভালোবাসা দিয়ে বিশ্বনিখিলকে ভাবশিষ্যে পরিণত সম্ভব, তাই ঈদগাহে  সমবেত হওয়ার জন্য সাবাইকে ডাক দিয়েছেন।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর  (অগ্রহায়ণ -পৌষ ১৩৪২) মাসে এইচএমভি থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৬ মাস।
     
  • গ্রন্থ:  নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২]। গান সংখ্যা ৫৯৫
  • রেকর্ড: এইচএমভি। ডিসেম্বর ১৯৩৫ (অগ্রহায়ণ -পৌষ ১৩৪২)।  এন ৭৪৪৮। শিল্পী: আব্বাসউদ্দীন আহমদ[[শ্রবণ নমুনা]
     
  • স্বরলিপিকার: নীলিমা দাস
     
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামি গান। ঈদের গান।
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।