বাংলার 'শের', বাংলার শির (banglar sher, banglar shir)
আশু-প্রয়াণ গীতি
কোরাস্: বাংলার 'শের', বাংলার শির,
বাংলার বাণী, বাংলার বীর সহসা ও-পারে অস্তমান।
এপারে দাঁড়ায়ে দেখিল ভারত মহা-ভারতের মহাপ্রয়াণ॥
বাংলার ঋষি বাংলার জ্ঞান বঙ্গবাণীর শ্বেতকমল,
শ্যাম বাংলার বিদ্যা-গঙ্গা অবিদ্যা-নাশী তীর্থ-জল!
মহামহিমার বিরাঁ পুরুষ শক্তি-ইন্দ্র তেজ-তপন-
রক্ত-উদয় হেরিতে সহসা হেরিনু সে-রবি মেঘ-মগন।
কোরাস্: বাংলার 'শের', বাংলার শির,
বাংলার বাণী, বাংলার বীর সহসা ও-পারে অস্তমান।
এপারে দাঁড়ায়ে দেখিল ভারত মহা-ভারতের মহাপ্রয়াণ॥
মদ-গর্বীর গর্ব-খর্ব বল-দর্পীর দর্প-নাশ
শ্বেত-ভিতুদের শ্যাম বরাভয় রক্তাসুরের কৃষ্ণত্রাস।
নব ভারতের নব আশা-রবি প্রাচী'র উদার অভ্যুদয়
হেরিতে হেরিতে হেরিনু সহসা বিদায়-গোধূলি গগনময়।
কোরাস্: বাংলার 'শের', বাংলার শির,
বাংলার বাণী, বাংলার বীর সহসা ও-পারে অস্তমান।
এপারে দাঁড়ায়ে দেখিল ভারত মহা-ভারতের মহাপ্রয়াণ॥
পড়িল ধসিয়া গৌরীশঙ্কর হিমালয়-শির স্বর্গচূড়,
গিরি কাঞ্চন-জঙ্ঘা গিরিল-বাংলার যবে দিন-দুপুর।
শিশুক-হাঙর শোষিছে রক্ত, মৃত্যু শোষিছে সাগর-প্রাণ-
পরাধীনা মা'র স্বাধীন সুতের মেদ-ধূমে কালো দেশ-শ্মশান।
কোরাস্: বাংলার 'শের', বাংলার শির,
বাংলার বাণী, বাংলার বীর সহসা ও-পারে অস্তমান।
এপারে দাঁড়ায়ে দেখিল ভারত মহা-ভারতের মহাপ্রয়াণ॥
অরাজক মারি মড়া-কান্নায় দেশ-জননীর বদ্ধ শ্বাস,
হে দেব-আত্মা! স্বর্গ হইতে দাও কল্যাণ, দাও আভাস,
কেমন করিয়া মৃত্যু মথিয়া মৃত্যুঞ্জয় হয় মানব;
শব হয়ে গেছ, শিব হয়ে এস দেবকী-কারার নীল কেশব।
কোরাস্: বাংলার 'শের', বাংলার শির,
বাংলার বাণী, বাংলার বীর সহসা ও-পারে অস্তমান।
এপারে দাঁড়ায়ে দেখিল ভারত মহা-ভারতের মহাপ্রয়াণ॥
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির সুনির্দিষ্ট রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় নি। স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয় ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মে (আষাঢ় ১৩৩১ বঙ্গাব্দ)। নজরুল তাঁর স্মরণে রচনা করেছিলেন 'আশু-প্রয়াণ গীতি'। বঙ্গবাণী পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩১ সংখ্যায় গানটি প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২৫ বৎসর ১ মাস।
- পত্রিকা: বঙ্গবাণী। আষাঢ় ১৩৩১ (জুন-জুলাই ১৯২৪)।
- গ্রন্থ: ভাঙার গান গ্রন্থের প্রথম সংস্করণে [১৩৩১ বঙ্গাব্দের শ্রাবণে (আগষ্ট ১৯২৪)] শিরোনাম আশু-প্রয়াণ গীতি ।