ওমা নির্গুণেরে প্রসাদ দিতে তোর মত কেউ নাই (o maa nirgunere prosad dite tor moto keo nai)
ওমা নির্গুণেরে প্রসাদ দিতে তোর মত কেউ নাই।
তোর পায়ে মা তাই রক্তজবা গায়ে শ্মশান-ছাই॥
দৈত্য-অসুর হনন ছলে
ঠাঁই দিস্ তুই চরণ তলে,
আমি তামসিকর দলে মা গো তাই নিয়েছি ঠাঁই॥
কালো ব'লে গৌরী তোরে কে দিয়েছে গালি,
(ওমা) ত্রিভুবনের পাপ নিয়ে তোর অঙ্গ হ'ল কালি।
অপরাধ না করলে শ্যামা
ক্ষমা যে তোর পেতাম না মা,
(আমি) পাপী ব'লে আশা রাখি চরণ যদি পাই॥
- ভাবসন্ধান: এই গানে মাতৃরূপিণী দুর্গার মহিমা নানা উপস্থাপন করা হয়েছে।
জগৎ-সংসারে গুণহীনকে প্রসাদ দিতে তাঁর মতো আর কোনো সত্তা নেই। এই কারণেই তাঁর পায়ে রক্ত-জবা এবং গায়ে শ্মশানের ছাই মাখা। এই বেশ-ভূষায় দেবী সাধারণ রূপে সাধারণ মানুষের কাছে মাতৃরূপিণী হয়ে প্রকাশিত হন। তিনি নানা ছলে তাঁর অসাধারণ সত্তাকে ঢেকে রাখেন তাঁর নানা রূপে। তিনি দৈত্য ও অসুরকে হত্যা করেছিলেন ছলনার ফাঁদে ফেলে, আবার তিনিই তাঁর পায়ে তাঁদের ঠাঁই দিয়েছিলেন তাঁর চরণতলে। ভক্ত নিজেকে তামসিকদের দলভুক্ত বলে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। ভক্ত দেবীর ছলনার কথা জানেন। তাই নির্ভাবনায় ঠাঁই নিয়েছে দেবীর চরণ তলে।
বহুরূপিণী এই দেবী গৌর বর্ণ ত্যাগ করে, কালী হয়েছিলেন। দেবী জগতের সকল পাপ গ্রহণ করে কালো বর্ণ ধারণ করেছন। দেবীর এই মহিমা বুঝতে পেরে অনেকে তাঁকে কালো বলে গালি দেয়। দেবীকে ভক্তের কখনো জানা হতো না, যদি না তিনি পাপ করতেন। যদি না তিনি দেবীর কৃপায় সে পাপ থেকে মুক্তি পেতেন। ভক্ত পাপী বলেই প্রত্যাশা করেন, দেবী তাঁর অপত্যস্নেহে ক্ষমা করবেন।
- রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪৪) মাসে এইচ.এম.ভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ২ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ১৩০৯ সংখ্যক গান।
- রেকর্ড: এইচএমভি । আগষ্ট ১৯৩৭। (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪৪) এন ৯৯৩৮। শিল্পী: সুধীর দত্ত
- সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: আহসান মুর্শেদ [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি সাতচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি ২০১৯] পৃষ্ঠা: ২৬-২৯। [নমুনা]
- পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শাক্ত। দুর্গা। বন্দনা ও প্রার্থনা
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর
- তাল: দাদরা
- গ্রহস্বর: স