ওরে গো-রাখা রাখাল তুই কোথা হতে এলি রে (ore go-rakha rakhal tui kotha hote eli re)
ওরে গো-রাখা রাখাল তুই কোথা হতে এলি রে
আষাঢ় মাসের মেঘের বরণ কেমন ক'রে পেলি রে॥
কে দিয়েছে আল্তা মেখে পা'য়,
চল্তে গেলে নূপুর বেজে' যায় রে; নূপুর বেজে' যায়।
তোর আদুল গায়ে বাঁধা কেন গাঁদা রঙের চেলি রে॥
তোর ঢল্ঢলে দুই চোখে যেন নীল শালুকের কুঁড়ি রে
তোরে দেখে কেন হাসে যত গোপ-কিশোরী রে।
তোর গলার মালার গন্ধে আমার মন
গুন্গুনিয়ে বেড়ায় রে মৌমাছি যেমন রে;
তুই ঘর-সংসার ভুলালি কোন মায়াতে ফেলি' রে॥
- ভাবসন্ধান: এই গানটিতে নানা রূপকতার মধ্য দিয়ে ব্রজধামের শ্রীকৃষ্ণের সৌন্দর্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এ গানে কৃষ্ণকে গো-রাখাল সম্বোধনে কবি জানতে চেয়েছেন- তাঁর আবির্ভাব এবং তাঁর সৌন্দর্যের গোপন রহস্য। কবির জিজ্ঞাসু মনের অভিব্যক্তির মধ্যে শ্রীকৃষ্ণ হয়ে উঠেছেন সৌন্দর্যে শ্রীমান।
কবি জানতে চেয়েছেন আষাঢ় মাসের মেঘের মতো তাঁর তনুর রঙ কোথা থেকে তিনি পেলেন। কে দিয়েছেন তাঁর আলতামাখা পায়ে নূপুর, যা তাঁর চলার পথে মধুর ধ্বনিতে বাজে। তাঁর নগ্ন শরীর ঘিরে গাঁদা রঙের চেলি, নীল শালুকের কুঁড়ির মতো ঢলঢল দুই চোখ দেখে কবি মুগ্ধ। তাঁর সে রূপ দেখে ব্রজের কিশোরীরা কেন হাসে, তার কারণ কবির জানা নেই। তাঁর কণ্ঠের গন্ধ-মালার সৌরভে মুগ্ধ কবির মন মৌ-পিয়াসী মৌমাছির মতো গুন্গুনিয়ে বেড়ায়। শ্রীকৃষ্ণের মোহিত করা সৌন্দর্যে কবি ঘর-সংসার বিবাগী হয়ে মায়ার ছলনায় যেন ঘুরে মরেন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে (অগ্রহায়ণ -পৌষ ১৩৪৮) হিন্দুস্থান রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪২ বৎসর ৬ মাস।
- রেকর্ড: হিন্দুস্থান। ডিসেম্বর ১৯৪১ (অগ্রহায়ণ -পৌষ ১৩৪৮)। এইচ ৯৭১। শিল্পী: কালীপদ সেন। সুর: নিতাই ঘটক।[শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: সুধীন দাশ। নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (নবম খণ্ড)। প্রথম প্রকাশ, তৃতীয় মুদ্রণ [কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। ২ পৌষ, ১৩৯৯ বঙ্গাব্দ/ ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ। তৃতীয় গান] [নমুনা]
- সুরকার: নিতাই ঘটক।
- পর্যায়: