ওরে ব্যাকুল বেণুবন (ore bekul benubon)
ওরে ব্যাকুল বেণুবন!
তোকে দিয়েই হতো শ্যামের মুরলী মোহন॥
তোর শাখাতে লেগে আছে শ্যামের হাতের ছোঁওয়া।
আজো কি তার পরশ-লোভে ডালগুলি তার নোওয়া।
আমার পড়লো মনে তোরে দেখে ও-বেণুবন পড়লো মনে,
বৃন্দাবনে যে সাতটি সুর বাজাত শ্যাম বাঁশির সনে॥
তার প্রথম সুরে আয় আয় ব'লে গোপিকায় ডাকে দূরে,
তার দ্বিতীয় সুরে বহে যমুনা উজান ব্রজকুমারী ঝুরে।
তার তৃতীয় সুরে সেই সুরে বাজে তার পায়ের নূপুর
সেই সুর শুনে নাচে বনের ময়ূর।
শুনি চতুর্থ সুর গুরু-গম্ভীর রোল,
মেঘে মৃদঙ্গ বাজে লাগে ঝুলনায় দোল্।
পঞ্চম সুরে তার কোয়েলা বোলে
ব্রজ-বসন্ত আসে মাতে হোরির রোলে।
ষষ্ঠ সুরে কেঁদে ডাকে সে রাধায়
সপ্তমে নিষাদ সে ভুবন কাঁদায়।
আখর: [নিষাদ সে তাই সাধ মিটিল না
ডাকিয়া বাঁশির সুরে বধে হরিণীরে ─ নিষাদ সে
তারে ভালোবেসে সাধ মেটে না ─ নিষাদ সে॥]
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জুন (রবিবার ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৬), কলকাতা বেতার কেন্দ্রের সান্ধ্য অনুষ্ঠান (৮.১৫-৮.২৯) বিজন কুমার ঘোষ, প্রথম এই গানটি পরিবেশন করেছিলেন। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১৩১৭। পৃষ্ঠা: ৩৯৮-৩৯৯]
- বেতার: কলকাতা বেতার কেন্দ্র। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জুন (রবিবার ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৬)। সান্ধ্য অনুষ্ঠান। ৮.১৫-৮.২৯। বিজন কুমার ঘোষ। [সূত্র: বেতার জগৎ। ১০ম বর্ষ, ১১শ সংখ্যা। ১ জুন ১৯৩৯। পৃষ্ঠা: ৪৩৪।
- পত্রিকা: নজরুল একাডেমী পত্রিকা, ঢাকা [গ্রীষ্ম ১৩৯৪]