ওরে যোগ-সাধনা পরে হবে (ore jog-sadhona pore hobe)
ওরে যোগ-সাধনা পরে হবে নাম জপ্ তুই আগে।
সকল কাজে সকাল সাঁঝে গভীর অনুরাগে॥
ওরে যে ঠাকুরে পরান যাচে
সে নামের মাঝে লুকিয়ে আছে,
যেমন বীজের মাঝে মহাতরু সঙ্গোপনে জাগে॥
বীজ না বুনে আগে ভাগেই ফসল খুঁজিস্ তুই,
তাই চিরকাল পোড়ো জমি রইল মনের ভুঁই।
তোর কোন্ পথ নাম জপের শেষে
দেখিয়ে দেবেন তিনিই এসে,
তোর জীবন হবে প্রেমে রঙিন রঙ যদি রে লাগে।
তাঁর মধুর নামের রঙ যদি রে লাগে॥
- ভাবসন্ধান: সাধক মোক্ষলাভ করতে চান যোগ-সাধনা অবলম্বনে। কিন্তু কবি মনে করেন- যোগ-সাধনার আগে সাধকের উচিৎ গভীর অনুরাগের সাথে সকাল সন্ধ্যায় সকল কাজের মধ্যেই আরাধ্য ঠাকুরের নাম জপ করা। এই ঠাকুর বিরাজ করেন সাধকের মনোলোকের গভীরে।
বীজের ভিতরে যেমন মহাতরু সঙ্গোপনে জেগে থাকে, তেমনি নামবীজের মাঝেই সদাজাগ্রত ঠাকুর লুকিয়ে থাকেন। মানব জমিনের চৈতন্যলোকে বীজ বপনের আগেই ফসলের আশা করা বৃথা। সাধক তা করেন না বলেই তার মনের ভূমি চিরকাল অনুর্বর অনাবাদী হয়ে পতিত রয়ে যায়।
কবি মনে করেন- আরাধ্য ঠাকুরের নামজপ শেষে তিনিই তাঁকে পাওয়ার পথ দেখিয়ে দেবেন। ঠাকুর মধুর নামের রঙ যদি একবার সাধকের মনে লাগে, তাহলে তাঁর জীবন হয়ে উঠবে ঠাকুরের প্রেমে রঙিন ও মোহময়।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে এইচএমভি একটি গানের রেকর্ড করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রেকর্ডটি পরে প্রকাশিত হয় নি। গানটি ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের কোন মাসে রেকর্ড করা হয়েছিল, তা জানা যায় না।
- গ্রন্থ:নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ। নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৭, ফেব্রুয়ারি ২০১১। গান: ১৩১৯। পৃষ্ঠা: ৩৩৯।
- রেকর্ড: এইচএমভি [১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ (১৯৪২-১৯৪৩ বঙ্গাব্দ)। শিল্পী: নিতাই ঘটক ও চামেলী দেবী। রেকর্ডটি পরে বাতিল হয়ে যায়]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। সাধারণ। পরমাত্মা। সাধনা