কঠিন ধরায় ফোটাতে ফসল-ফুল (kothin dhoray fotate foshol ful)

কঠিন ধরায় ফোটাতে ফসল-ফুল।
কে জানে মহা-সিন্ধু কেন গো হইয়া ওঠে ব্যাকুল

        মেঘ হ'য়ে কেন আকাশ ভরিয়া
        বারিধারা রূপে পড়ে গো ঝরিয়া,
কত লোক ভাবে উৎপাত এলো, কত লোক ভাবে ভুল॥
কার বাঁধা-ঘর ভেঙে গেল হায় বোঝে না'ক তাহা মেঘ,
কুলে কুলে আনে ফুলের বন্যা তাহার প্রেমের বেগ।
        জানে না কাহার করিল সে ক্ষতি
        সে জানে স্নিগ্ধ হ'ল বসুমতী,
যে অকূলের পথে টানে, সে বোঝে না ভাসিল কাহার কুল॥

  • ভাবার্থ: প্রকৃতির যা কিছু ঘটে, তার সবই প্রকৃতির বিধিতে। জগতের কারো ক্ষতি-বৃদ্ধিতে তার কিছু যায় আসে না। এই অমোঘ বিধিতেই নিহিত রয়েছে- জগতের অংশবিশেষে কল্যাণ-অকল্যাণ। কবি এই গানে মেঘের উপমায় এই বিষয়টিই উপস্থাপন করেছেন- তাঁর মর্মী দর্শন।

    নিরস কঠিন পৃথিবী ফুল ও ফসলে ভরিয়ে তোলার জন্য মহাসাগরের উত্থিত বাষ্পরাশি মেঘ হয়ে স্থলভূমিকে আবৃত করে। তারপর  জলধারা হয়ে নেমে আসে ভূমিতে। ফুল ও ফসলের কল্যাণের জন্য জলধারা অমৃতসমান হলেও- অপরিমিত বর্ষণে সৃষ্ট প্লাবন হয়ে ওঠে জনবসতির জন্য উৎপাত। প্রবল বন্যায় কত বসতির বাঁধা ঘর ভেঙে যায়। কিন্তু অবুঝ মেঘ এ সবের তোয়াক্কা করে না। সে শুধু ভূমিকে সুফলা, সপুষ্পিত করার জন্য, তার প্রেমের জোয়ারের ভাসিয়ে দিতে চায়। ব্যক্তি বিশেষের ক্ষতির চেয়ে তার কাছে অনেক বড় বিষয়- বসুমতীকে তার তার জলধারায় সরস স্নিগ্ধ করা।

     
  • রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। 
     
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১৩৪৫। পৃষ্ঠা: ৪০৭ ]
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি ও মরমী

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।