কত যে রূপে তুমি এলে হযরত এই দুনিয়ায় (koto je rupe tumi ele hazrat ei duniyay)

কত যে রূপে তুমি এলে হযরত এই দুনিয়ায়
তোমার ভেদ যে জানে আখেরি নবী কয় না তোমায়॥
আদমের আগে ছিলে আরশ পাকে, তার আগে খোদায়।
আদমের পেশানিতে হেরেছি তব জ্যোতি চমকায়।
ছিলে ইব্রাহিমের মধ্যে তুমি, ফুল হলো তাই নমরুদের আগুন।
নুহের মধ্যে ছিলে তাই কিশতী তার ডুবলো না দারিয়ায়॥
কভু ইউসুফ হয়ে আসিলে তাই রূপের বাজারে
কত যে জুলেখা হায় লুটাইল তব রাঙা পায়।
মুসার মধ্যে ছিলে ডুবে মুসা দেখলো খোদার নূর
ঈশার মধ্যে ছিলে তাই বেঁচে চৌখা আশমানে ধায়॥
আসিলে সবার শেষে এ যে এই লীলা হে আহমদ
তাই তব প্রিয় নাম আউলিয়া ও আম্বিয়া সব ধেয়ায়॥

  • ভাবসন্ধান: এই গানে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর মহিমা উপস্থাপন করা হয়েছে আধ্যাত্মিক মহিমার বিচারে। কবি মনে করেন- যাঁরা তাঁকে শুধুই শেয জামানার শেষ নবি বলে থাকেন, তাঁরা সৃষ্টি তত্ত্বের বিচারে তাঁর উপস্থিতির রহস্য জানেন না।

    তিনি আদিতে মিশে ছিলেন আল্লাহর অবিচ্ছেদ্য অংশ রূপে। তাঁরপর তিনি স্থান পান- খোদার আরশে আল্লাহর সঙ্গী হয়ে। এরপর তিনি প্রথম নবী আদম (আঃ)-এর কপালের জ্যোতির আভা রূপে ছিলেন। তিনি ছিলেন ইব্রাহিম (আঃ)-এর মধ্যে, তাই নমরুদ যখন তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করেন, তখন তাঁর ভিতরে মুহম্মদ (সাঃ)-এর মহিমা বিরাজিত ছিল। তাই আগুন ফুলে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। তিনি নূহ (আঃ)-এর সাথে মিশে ছিলেন। তাই মহাপ্লাবনে তাঁর নৌকা ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছিল। তিনি ইউসুফ (আঃ)-এর অপরূপ সৌন্দর্যে মিশে ছিলেন। সে রূপের মোহে কত না জুলেখা তাঁর প্রেমে মত্ত হয়ে তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়েছিল। তিনি মুসা (আঃ)-এর সাথে একীভূত ছিলেন বলে তিনি আল্লাহর নূর দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি ঈশা (আঃ)-এর সাথে মিশেছিলেন বলে তিনি আল্লাহ তাঁকে চতুর্থ আসমানে তুলে নিয়েছিলেন। এরপরে সর্বশেষ নবী হিসেবে আসেন মুহম্মদ (সাঃ)। তিনি মহান। তিনি আল্লাহর প্রিয় বান্দা বলে আউলিয়া এবং আল্লাহর প্রেরিত নবি বলে তিনি আম্বিয়া।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। 
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ৩০৬৭। পৃষ্ঠা: ৯৩৯]
    সূত্র: দুর্গাদাস চক্রবর্তীর খাতা।
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলাম ধর্ম। নাত-এ-রসুল

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।