কেন বাজাও বাঁশি কালোশশী মৃদু মধুর তানে (keno bajao banshi kalo shoshi mridu modhur tane)
কেন বাজাও বাঁশি কালোশশী মৃদু মধুর তানে।
ঘরে রইতে নারি জ্ব’লে মরি বাজাইও না বনে
বাঁশি, আর বাজাইও না বনে॥
নিঝুম রাতে বাজে বাঁশি
পরায় গলে প্রেম-ফাঁসি,
কেহ নাহি জানে হে শ্যাম (আমি) মরি শুধু প্রাণে॥
রাখ রাখ ও-বাঁশরি
ওহে কিশোর-বংশীধারী,
মন নাহি মানে হে শ্যাম (বঁধু) বাঁশি কি গুণ জানে॥
- ভাবসন্ধান: কৃষ্ণের প্রতি রাধার প্রেমের তীব্র আকর্ষণকে উপস্থাপন করা হয়েছে- নিঝুম রাতে বাদিত কৃষ্ণের বংশীধ্বনির রূপকতায়। মূলত রাধার মনে কৃষ্ণের প্রেমের বাঁশি সর্বদাই প্রেমাগ্নিকে উদ্বেলিত করে রাখে। নিঝুম রাতের তাঁর বাঁশীর ধ্বনি ঘর ছেড়ে গোপন অভিসারে যাওয়ার বাসনা কে উসকে দেয়।
গভীর রাতে কালোশশীর (কৃষ্ণ) বাঁশী বাজে দূর বনে। রাধার কাছে এই কৃষ্ণের বাঁশীর সুর হয়ে প্রেমাভিসারে যাওয়ার আহ্বান। সে বাঁশীর সুরে রাধার মনে জ্বলে উঠা প্রেমাগ্নিকে উপেক্ষা করে, রাধা ঘরে থাকতে পারেন না। তাই তাঁর সকরুণ মিনতি, যেন কৃষ্ণ নিঝুম রাতে এই বাঁশী আর না বাজান। কারণ গভীর রাতের এই বাঁশির সুর তাঁর গলায় প্রেম-ফাঁসি হয়ে ওঠে। একথা তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না। জানাতেও চান না। তাই প্রেমাভিসারে যাওয়ার পরিবর্তে রাধা কিশোর-বংশীধারী কাছে স্বগোক্তিতে সংগোপনে এই বাঁশি না বাজানোর অনুরোধ করেছেন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৩৯) মাসে এইচএমভি থেকে গানটির রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ৯ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ৭৭০।
- রেকর্ড: এইচএমভি। মার্চ ১৯৩৩ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৩৯)। এন ৭০৮৪। শিল্পী: হরি বাঈজী [শ্রবন নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, দ্বাবিংশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা ভাদ্র, ১৪০৭/ সেপ্টেম্বর, ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ] ১২ সংখ্যক গান। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব। রাধাকৃষ্ণলীলা
- সুরাঙ্গ: স্বকীয়
- তাল: কাহারবা
- গ্রহস্বর: দ্পা