খাতুনে জান্নাত ফাতেমা জননী (khatune jannat fatema jononi)

খাতুনে জান্নাত ফাতেমা জননী  বিশ্ব-দুলালী নবী নন্দিনী,
মদিনাবাসিনী পাপতাপ নাশিনী উম্মত-তারিণী আনন্দিনী॥
            সাহারার বুকে মাগো তুমি মেঘ-মায়া,
            তপ্ত মরুর প্রাণে স্নেহ-তরুছায়া;
মুক্তি লভিল মাগো তব শুভ পরশে বিশ্বের যত নারী বন্দিনী॥
হাসান হোসেনে তব উম্মত তরে, মাগো
কারবালা প্রান্তরে দিলে বলিদান,
বদলাতে তার রোজ হাশরের দিনে
চাহিবে মা মোর মত পাপীদের ত্রাণ।
        এলে পাষাণের বুকে চিরে নির্ঝর সম,
        করুণার ক্ষীরধারা আবে-জমজম;
ফিরদৌস হ'তে রহমত বারি ঢালো সাধ্বী মুসলিম গরবিনী॥

  • ভাবসন্ধান: ইসলামের ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা হযরত ফাতেমা (রা.)-এর প্রশংসায় রচিত এই গানে- কবি তাঁকে বিশ্বনবীর আদুরে কন্যা অর্থে 'বিশ্ব-দুলালী নবী নন্দিনী হিসেবে সম্বোধন করেছেন। জান্নাতের নারীদের মাতৃরূপে নেতৃত্ব দেবেন বলে- তাঁকে  তাঁকে বলা হয়েছে- 'খাতুনে জান্নাত ফাতেমা জননী'। তাঁর বন্দনায় কবি মদিনাবাসিনী এই কন্যাকে - পাপতাপ নাশিনী এবং উম্মত-তারিণী (নবির উম্মদের পাপ মোচনকারিণী) এবং 'আনন্দিনী' বিশেষণে বিভূষিতা করেছেন।

    তাঁকে সাহারার (মরুপ্রান্তর) মাঝখানে 'মেঘ-মায়া' বলা হয়েছে। এই মেঘ তপ্ত মরুর বুকে প্রাণের আনে স্নেহতরুর অনুভব। তাই তিনি করুণা ও শান্তির প্রতীক। নারীর মুক্তির প্রতীক হিসেবে বলা হয়েছে- তাঁরই স্পর্শ-করুণায় বন্দিনী নারী মুক্তি লাভ করেছিল। তাঁর সন্তান হাসান ও হোসাইন (রাঃ), যারা উম্মতের জন্য কারবালার যুদ্ধের সূত্রে প্রাণ ত্যাগ করেছেন। কবির মতে কিয়ামতের দিনে এই ত্যাগের বদলে তিনি উম্মতের জন্য মুক্তি কামনা করবেন। তিনি এসেছিলেন পাষাণের বুকে চিরে নির্ঝরের মতো, আবে-জমজমের করুণার ক্ষীরধারা হয়ে। ফিরদৌস (বেহেশ্‌ত) থেকে রহমতে জলধারা প্রবাহিত করেন এই সাধ্বী গরবিণী।

     
  • রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের জুন  (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৪) মাসে টুইন গানটির রেকর্ড করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ১ মাস।
     
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ৬৪০]
  • রেকর্ড: টুইন [জুন ১৯৩৭ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৪)। এফটি ৪৯২৭। শিল্পী: আব্বাসউদ্দীন আহমদ। সুরকার: কমল দাশগুপ্ত[শ্রবন নমুনা]
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: আহসান মুর্শেদ [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, সাতাশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক, ১৪১২/অক্টোবর ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ] ১২ সংখ্যক গান [নমু্না]
     
  • সুরকার: কমল দাশগুপ্ত
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলাম ধর্ম। বন্দনা। হযরত ফাতিমা (রাঃ)
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের গান
    • তাল: কাহারবা
    • গ্রহস্বর: রা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।