খেলে নন্দের-আঙিনায় আনন্দ দুলাল (khele nonder anginay anondo dulal)
খেলে নন্দের-আঙিনায় আনন্দ দুলাল।
রাঙা চরণে মধুর সুরে বাজে নূপুর-তাল॥
নবীন নাটুয়া বেশে
নাচে কভু হেসে হেসে,
যাশোমতীর কোলে এসে দোলে কভু গোপাল॥
'ননী দে' বলিয়া কাঁদে কভু রোহিণী-কোলে,
জড়ায়ে ধ'রে কদম তরু তমাল-ডালে দোলে।
দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গ হ'য়ে
বাজায়ে মুরলী ল'য়ে,
কভু সে চরায় ধেনু বনের রাখাল॥
- ভাবসন্ধান: গানটিতে শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন লীলার মহিমায় শিশু কৃষ্ণ বা গোপালকে তাঁর বিভিন্ন লীলা রূপকে উপস্থাপন করা হয়েছে। গানটিতে পাওয়া যায় শ্রীকৃষ্ণের শৈশবের আনন্দময়, চঞ্চল ও ঐশ্বরিক লীলাগুলির এক কাব্যিক প্রতিচ্ছবি। এর একদিকে যেমন বাল্যলীলার মাধুর্য পাওয়া যায়, অন্যদিকে তেমনি তাঁর ত্রিভঙ্গ মুরলীধারী রূপে বিশ্ব-রাখালের চিরন্তন রূপ পাওয়া যায়।
আনন্দময় আদুরে শিশু কৃষ্ণ নন্দ মহারাজের আঙিনায় খেলা করছেন। তাঁর রাঙা (লালচে সুন্দর) পায়ে মধুর সুরে নূপুর বাজছে খেলার তালের ছন্দে। কখনো তিনি নতুন নটের (নৃত্য-অভিনেতা) বেশে হেসে হেসে নৃত্য করছেন। আবার কখনো বা তিনি তাঁর মা যশোমতীর (যশোদা) কোলে এসে পরম আদরে দোল খাচ্ছেন। খেলাচ্ছলে তিনি আবার কখনো 'ননী (মাখন) দাও' বলে রোহিণীর (বলরামের মা) কোলে শুয়ে কাঁদছেন। কখনো তিনি কদম গাছ বা তমাল গাছের ডাল জড়িয়ে ধরে দুলছেন। কখনো আবার তিনি ত্রিভঙ্গে দাঁড়িয়ে মুরলীতে (বাঁশি) সুর তুলছেন। কখনো তিনি বনের রাখাল বালকদের সাথে গরু চরাচ্ছেন। এসবই কৃষ্ণের বিশ্বরূপের কৈশোরলীলার অংশ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪৪) এইচএমভি গানটির প্রথম রেকর্ড করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২]। গান সংখ্যা ১২৪৩।
- রেকর্ড:
- পত্রিকা: ভারতবর্ষ। বৈশাখ ১৩৪৫ (এপ্রিল-মে ১৯৩৮)। জগৎ ঘটক-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল। [নমুনা]
- সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- আহসান মুর্শেদ। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি ছেচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট । ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি ২০১৯] পৃষ্ঠা: ৩৭-৩৮। [নমুনা]
- আহসান মুর্শেদ। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি ছেচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট । ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি ২০১৯] পৃষ্ঠা: ৩৭-৩৮। [নমুনা]
- পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব। বাল্যলীলা
- সুরাঙ্গ: সাদরা
- রাগ: দেবগান্ধার
- তাল: ঝাঁপতাল
- গ্রহস্বর: সা