খোদায় পাইয়া বিশ্ব বিজয়ী ছিল একদিন যারা (khoday paiya bishwo bijoyi chhilo ekdin jara)

খোদায় পাইয়া বিশ্ব বিজয়ী ছিল একদিন যারা
খোদায় ভুলিয়া ভীত পরাজিত আজ দুনিয়ায় তারা॥
        খোদার নামের আশ্রয় ছেড়ে
        ভিখারির বেশে দেশে দেশে ফেরে
ভোগ বিলাসের মোহে ভুলে, হায় নিল বন্ধন কারা॥
খোদার সঙ্গে যুক্ত সদাই ছিল যাহাদের মন
দুখে রোগে শোকে অটল যাহারা রহিত সর্বক্ষণ।
        এসে শয়তান ভোগ বিলাসের
        কাড়িয়া লয়েছে ঈমান তাদের
খোদায় হারায়ে মুসলিম আজ হয়েছে সর্বহারা॥

  • ভাবসন্ধান: এই গানে মুসলমানদের অতীত গৌরব, বর্তমান দুর্দশার কারণ এবং হৃত গৌরব ফিরে পাওয়া দিক নির্দেশনা উপস্থাপন করা হয়েছে। এই দিক নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে মুসলিম জাগরণের বার্তা।

    অতীতে মুসলমানরা আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করে বিশ্বজয়ী হয়েছিল। তারা আজ আল্লাহকে ভুলে গিয়ে ভীত পরাজিত। এখন তারা খোদার আশ্রয়হীন হয়ে ভিখারির বেশে দেশে দেশে ঘুরে মরছে। তারা ভোগ বিলাসের মোহে ভুলে এখন দাসত্বের বন্ধনে আবদ্ধ।

    যারা এক সময় মনে প্রাণে খোদার সান্নিধ্যে ছিলেন, দুখে রোগে শোকে অটল থেকে শুধু খোদার উপর ভরসা করে জীবনযাপন করতেন, তাঁরদেরকে শয়তান ভোগবিলাসের মোহে ইমানকে নষ্ট করে বিপথে চালিত করেছ। এখন তাঁর খোদাকে হারিয়ে সর্বাহারা। 

    এই গানে মুসলমনাদের দুর্দশার কারণ দেখিয়ে মুসলমানদের কাছে একটি হৃত গৌরব ফিরে পাবার পথের সন্ধান দিয়েছেন। সে পথ হলো- শয়তানের দেওয়া মোহময় জগৎ থেকে নিজেকে ফিরিয়ে এনে আল্লার পথে আসা।

     
  • গ্রন্থ: নজরুল রচনাবলী সপ্তম খণ্ড [কার্তিক ১৪১৯, নভেম্বর ২০১২। বনগীতি দ্বিতীয় খণ্ড। ১১। গান সংখ্যা ৪৩৫
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৪৭) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ৯ মাস।

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।