খোদার রহম চাহ যদি নবীজীরে ধর (khodar rohom chaho jodi nobiji re dhoro)
খোদার রহম চাহ যদি নবীজীরে ধর।
নবীজীরে মুর্শিদ কর নবীর কলমা পড়॥
আল্লা যে ভাই অসীম সাগর
কয়জন জানে তাঁহার খবর,
(যদি) এ সাগরে যাবে, নবী নামের নায়ে চড়॥
নবীর সুপারিশ বিনা আল্লার দরবারে কেউ যেতে নাহি পারে,
ও ভাই আল্লা যেন সুর সেই সুরে সুমধুর বাজে নবীর বীণা তারে।
আল্লা নামের ঝিনুকে ভাই মুক্ত যেন নবী
আল্লা নামের আসমানে ভাই নবী যেন রবি,
প্রিয় মোহাম্মদের নামরে ভাই আল্লা তালার চাবি
খোদা দয়া করবেন সদা নবীরে সার কর॥
- ভাবসন্ধান: পারলৌকিক জগতে আল্লার করুণা পাওয়ার উপায় হিসেবে- মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মাধ্যমেই আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে এই গানে। তিনি পাপীতাপী মানুষের পরলৌকিক শান্তির জন্য নবিজীকে মুর্শিদ (আধ্যাত্মিক শিক্ষক বা পথপ্রদর্শক) গ্রহণ করে কলমা (ঈমানের সাক্ষ্য) পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
কবি আল্লার মহিমার ব্যপ্তীকে অসীম সাগরের সাথে তুলনা করে বলেছেন- এই অন্তহীন সাগরের একমাত্র নৌকা হলো নবি-নামের নৌকা। নবির সুপারিশ ছাড়া আল্লাহর দরবারে কেউ যেতে পারবে না।
আল্লাহর সাথে নবির গভীর সম্পর্কের কথা ব্যক্ত করা হয়েছ রূপকল্পের মাধ্যমে। কবি বলছেন- আল্লাহ যেন সুর এবং নবী যেন সেই সুরে বাজানো সুমধুর বীণা—অর্থাৎ, আল্লাহর অস্তিত্ব ও সৌন্দর্য নবীর মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। আল্লাহ নামের ঝিনুকে মুক্তা হলেন নবী। আল্লাহ নামের আসমানে রবি (সূর্য) হলেন নবী। আল্লাহর তালার চাবি হলেন প্রিয় মুহাম্মদের নাম। কবি মনে করেন- নবীকে সার (মূল) হিসেবে মান্য করলেই, খোদার করুণা তাঁর উপর সর্বদা বর্ষিত হবে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭) মেগাফোন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ১১ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২) -এর ১২৪১ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৩৭৭।
- রেকর্ড: মেগাফোন [মে ১৯৪০ (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭)। জেএনজি ৫৪৭১। শিল্পী: অনন্তবালা বৈষ্ণবী। সুর: নজরুল ইসলাম]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামী গান। নাত-এ-রসুল