গম্ভীর আরতি নৃত্যের ছন্দে (gomvir aroti nrityer chhonde)
গম্ভীর আরতি নৃত্যের ছন্দে।
হে প্রভু! তোমারে প্রকৃতি বন্দে॥
চন্দ্র সূর্য কত শত গ্রহ তারা
তোমারে ঘিরি' নাচে প্রেমে মাতোয়ারা,
অনন্ত কাল ঘোরে ধূমকেতু উল্কা আগুন জ্বালায়ে বুকে উগ্র আনন্দে
লীলায়িত সিন্ধু অবোধ১ উল্লাসে২
মেঘ হ'য়ে উড়ে যেতে চায় তব পাশে।
নব নব সৃষ্টি বৃষ্টিধারার প্রায়
সেই ছন্দের তালে অবিরাম ঝ'রে যায়,
ধরণীর গোপন অনুরাগ ভক্তি ফুটে ওঠে নীরব পুষ্প-সুগন্ধে॥
- ভাবসন্ধান: কবি মনে করেন, পরম আনুগত্যে বিশ্বপ্রকৃতির প্রতিটি সত্তা যেন পরমসত্তার বন্দনা করে চলেছে- কবির এই অনুভবকেই নানা উপমায় ও রূপকতার উপস্থাপন করেছেন এই গানে।
কবি মনে করেন, সমগ্র চরাচর যেন গম্ভীর আরতির নৃত্যের ছন্দে পরমসত্তাকে বন্দনা করে চলেছে। মহাকাশে চন্দ্র-সূর্য, অগণন গ্রহ-নক্ষত্র চলেছে প্রকৃতি ছন্দিত বিধি মান্য করে। কবি মনে করেন- মহাকাশের সত্তাসমূহের এই চলা পরমসত্তার প্রতি গভীর প্রেমের উচ্ছ্বাসের প্রকাশ মাত্র। অনন্তকাল ধরে আবর্তিত হয়ে চলেছে যে ধূমকেতু, অগ্নিবক্ষধারী উল্কার উগ্র আনন্দ, পরমসত্তার সান্নিধ্য পাওয়ার জন্ লীলায়িত সমুদ্রের অবোধ উল্লাসে মেঘ হয়ে উড়ে যাওয়ার বাসনা, এ সবই পর্মসত্তার প্রতি আনুগত্য ও বন্দনার প্রকাশ মাত্র।
পরমসত্তার নতুন নতুন সৃষ্টি-প্রবাহ, অবিরাম বৃষ্টিধারার মতো সৃষ্টির ছন্দে উদ্বেলিত। আর ধরণী তার গোপন অনুরাগ ও ভক্তি নিবেদন করে চলেছে তার নীরব পুষ্প-সুগন্ধে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৪৬) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি প্রথম গানটির একটি রেকর্ড প্রকাশ করে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ৯ মাস।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান ১২৫২ তাল: কাহারবা। পৃষ্ঠা ৩৮১]
- রেকর্ড: এইচএমভি [মার্চ ১৯৪০ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৪৬)। এন ১৭৪৩৩। শিল্পী মৃণালকান্তি ঘোষ। সুরকার: নজরুল ইসলাম]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- ইদ্রিস আলী। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি চুয়াল্লিশততম খণ্ড। নজরুল ইন্সটিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত। আষাঢ় ১৪২৪/জুন ২০১৮] পৃষ্ঠা: ১০১-১০৪। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমসত্তা। বন্দনা
- সুরাঙ্গ: ভজন
- তাল: কাহারবা
- গ্রহস্বর: গপ