গাও কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ নাম (gao krishno krishno krishno nam)
গাও কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ নাম।
গাও দেহমন শুক সারি, গাও রে ব্রজের নরনারী
গাহ কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ নাম॥
গাও তাঁরি নাম যমুনার বারি
গাও কুহু কেকা ধেনু বন-চারী,
গাহরে শ্রীদাম গাহ সুদাম॥
গাহ রে সজল শ্যামল গগন
কদম্ব-তরু তমাল কানন,
গাহ রে ভ্রমর মাধবী-লতা কৃষ্ণ-কথা, শ্রবণ অভিরাম॥
গাহ লো বিশাখা, গাহ লো ললিতা
গাহ শ্যাম-দায়িতা চন্দ্রাবলী (শ্যাম নাম),
গাহ লো চন্দ্রাবলী,
ভুবন ছাপিয়া গগন ব্যাপিয়া উঠুক কাঁপিয়া নাম-কাকলি।
(শ্যাম-নাম কাকলি।) তোরা গেয়ে যা গেয়ে যা।
হয়ে শ্যাম-নামে বিবাগী পথে পথে ধেয়ে যা।
ঘনশ্যাম পল্লবে মনো-বন ছেয়ে যা।
বহিয়া যাক শ্যাম-নাম সুরধুনী
মধুর হোক মৃত্যু শ্যাম নাম শুনি'॥
- ভাবার্থ: এই গানে কৃষ্ণনামে উদ্বুদ্ধ হয়ে, সবাইকে তাঁর নাম-বন্দনা করার আহ্বান করা হয়েছে। সাধারণ বিষ্ণুর নামকীর্তনে কৃষ্ণ, রাম ও হর এই তিনটি নাম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই গানে শুধু কৃষ্ণ নামই সুমিষ্ট সুরে গাওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। এই আহ্বানের তালিকায় রয়েছে- শুক-সারী, ব্রজের নরনারী, যমুনার জল, কোকিল, ময়ূর, গাভী, বন-চারী প্রাণিকুল, শ্রীদাম, সুদাম, সজল শ্যামল গগন, কদম ও তমাল তরুর কানন, ভ্রমর, মাধবী-লতা, কৃষ্ণ প্রেমিকা চন্দ্রাবলী এবং রাধার সখি বিশাখা।
এই নাম অবিরাম উচ্চারিত হোক, তাঁর নাম ভুবন ছাপিয়ে মহাকাশকে সমাবৃত করুক। কবির প্রত্যাশা, যেনো এই নামের টানে, প্রেম-বিবাগী হয়ে বিষ্ণুর পথে সবাই ধাবমান হোক। যার প্রভাব পড়ুক ঘনশ্যাম পল্লবে এবং মনো-বনে। মৃত্যুকালে যেন কবি শুনতে পান শ্যামনাম। যার প্রভাবে মধুর হয়ে উঠুক মৃত্যুর ক্ষণ।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে নভেম্বর কলকাতার নাট্যনিকেতন মঞ্চে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের 'চক্রব্যুহ' মঞ্চস্থ হয়। এই নাটকের জন্য নজরুল এই গানটি-সহ আরও কয়েকটি গান রচনা করেছিলেন। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৫ বৎসর ৪ মাস।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২৩১৯। গান সংখ্যা ১২৫৩। পৃষ্ঠা: ৩৮১]
- নজরুলের হারানো গানের খাতা [নজরুল ইন্সটিটিউট। আষাঢ় ১৪০৪/জুন ১৯৯৭। ১০৭। কীর্ত্তন (চক্রব্যূহ)। পৃষ্ঠা: ১৩৪]
- মঞ্চ: চক্রব্যূহ (নাটক)। নাট্যকার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। [মঞ্চস্থ: নাট্যনিকেতন। ২৩ নভেম্বর ১৯৩৪ (শুক্রবার ৭ নভেম্বর ১৩৪১)। চরিত্র বিদূর।]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণবসঙ্গীত। নাম-বন্দনা।