গাহে আকাশ পবন নিখিল ভুবন (gahe akash pobon nikhil vubon)

গাহে আকাশ পবন নিখিল ভুবন (গাহে) তোমারই নাম।
সাগর নদী বন উপবন (গাহে) তোমারই নাম॥
            মধুর তোমার গানের নেশায়
            ঘোর লাগে ঐ গ্রহ-তারায়,
অনন্ত কাল ঘুরিয়া বেড়ায় 
 ঘিরি' অসীম গগন॥
            তোমার প্রিয় নামে, হে বঁধু,
            ফুলের বুকে পুরে মধু।
            তোমার নামের মাধুরী মাখি'
            গান গেয়ে যায় বনের পাখি,
নিখিল পাগল ও নাম ডাকি' 
 কোটি চন্দ্র তপন॥

  • ভাবসন্ধান: পরমসত্তা সর্বত্র বিরাজমান। যেন তিনি তাঁরই নিজের সৃষ্টির মধ্যে নিজের বন্দনা গীতে মুখরিত হয়ে ওঠেন।

    এই বন্দনাগীতটি দুটি পর্যায়ে উপস্থাপিত হয়েছে। এর প্রথম পর্যায়ে কবি নৈর্যাক্তিক। তাই অংশটুকু তিনি তৃতীয় সত্তা হিসেবে পর্যবেক্ষকের মতো করে অনুভব করেছেন। গানটির দ্বিতীয় পর্যায়, পরমসত্তা বন্ধুর মতো। এই অংশে কবি প্রত্যক্ষভাবে পরমসত্তার সন্নিধ্যধন্য হয়ে সঙ্গীতময় বিশ্বচরাচরের রূপ উপস্থাপন করেছেন।

    প্রথমাংশে কবি দেখছেন পরমসত্তা বন্দনা মগ্ন সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি সত্তা তথা আকাশ, পবন, সাগর নদী, বন উপবন, গ্রহ-নক্ষত্রকে। কবি তাঁর কল্পলোকের বিহারে অনুভব করেন- এই বন্দনাগীতের মধুর নেশার ঘোরে অসীম মহাকাশে অনন্ত কাল ধরে অগণন গ্রহ-নক্ষত্র।

    গানের দ্বিতীয়াংশে কবির কাছে এই পরমসত্তা প্রিয় বন্ধুতূল্য। তাই তাঁকে বন্ধু হিসেবে সম্বোধন করছেন। কবি এই বন্ধুকে জানাচ্ছেন যে, তাঁরই নামের মহিমায় ফুলের বুকে মধু জমে ওঠে, তাঁরই নামের মাধুরী মেখে গান গায় বনের পাখি।  সেই সাথে নিখিল বিশ্বলোকের অগণন চন্দ্র তপন,  উন্মাদের মতো বন্দনীগীত গায় তাঁরই নামে।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে সেপ্টেম্বর  (ভাদ্‌র-আশ্বিন ১৩৪২) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি এই গানটির রেকর্ড প্রথম প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৩ মাস।
     
  • গ্রন্থ:  নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২) -এর ১২৫৫ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৩৮২।
     
  • রেকর্ড: এইচএমভি [সেপ্টেম্বর ১৮৩৫ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪২)]। এন ৭৪১৪। শিল্পী: মিস্‌ প্রমোদা। ] [শ্রবণ নমুনা]
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:  সেলিনা হোসেন [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, তেতাল্লিশতম খণ্ড, আষাঢ় ১৪২৫] গান সংখ্যা ৫। পৃষ্ঠা: ৩৫-৩৭ [নমুনা]
     
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমসত্তা। বন্দনা
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর
      • তাল: কাহারবা
      • গ্রহস্বর:  র [স্বরলিপিতে নির্দেশিত আছে, মধ্যমকে স ধরে গাইতে হবে]

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।