গুণ্ঠন খোলো পারুল মঞ্জরি (gunthon kholo parul monjori)

গুণ্ঠন খোলো পারুল মঞ্জরি।
বল গো মনের কথা বনের কিশোরী॥
চৈতালি চাঁদের তিথি যে ফুরায়
কাঁদিয়া কোয়েলিয়া পরদেশে যায়,
মধুমাখা নাম তব, মধুকর গায় মৃদুল গুঞ্জরি॥
বনমালী নিতি আসি' ভাঙায় ঘুম
বনদেবী গাহে জাগো দুলালি কুসুম,
কত মল্লিকা বেলি বকুল চামেলি
বিলায়ে সুবাস হের গিয়াছে ঝরি'॥

  • ভাবার্থ: প্রকৃতিতে মনোমুগ্ধ পারুল ফুল শুধু নিজের সৌন্দর্‌য-সৌরভ নিয়ে ফোটে না, প্রকৃতিকে তার সৌন্দর্য দিয়ে আবেশিত করে- এই ভাবনা থেকে কবি এই গানটি বেঁধেছিলেন কল্পবাস্তবতার সুর ও বাণীতে।

    কবির কাছে এই ফুল সলাজ অন্তর্মুখী কিশোরীর মতো। তাই কবি তাকে পাপড়ির খোমটা খুলে মনের কথা বলার জন্য অনুনয় করছেন। চৈতালি চাঁদের তিথি শেষে বসন্তের কোকিল পরদেশে চলে যায়, কিন্তু মধুকর তার মৃদু গুঞ্জনে মধুমাখা নামগান করে। পুস্পিত বনভূমিতে ফুল সঞ্চয়নের জন্য বনমালী প্রতিটি ভোরে এসে তার ঘুমভাঙায়, সেই সাথে বনদেবীও যেন ভোরের আগমনী গান গেয়ে তাকে জাগিয়ে তোলে।  কবি তাকে মনে করিয়ে দেয় যে, কত মল্লিকা, বেলি, বকুল, চামেলি প্রস্ফুটিত হয়ে ঝরে গেছে, তবে কিশোরৌ পারুল কেন নিজেকে প্রস্ফুটিত করতে পারছে না।

     
  • রচনাকাল ও স্থান:   গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৪) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি এই গানের একটি রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ১১ মাস।
     
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২) -এর ১২৬১ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৩৮৩।
  • রেকর্ড: এইচএমভি [মে ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দ (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৪)]। এন. ৯৮৯৪। শিল্পী: রাধারাণী।  [শ্রবণ নমুনা]
     
  • সুরকার: নজরুল ইসলাম
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (জাগতিক, ফুল)
    • সুরাঙ্গ: ঠুমরী
      • রাগ: মিশ্র
      • তাল: দাদরা
      • গ্রহস্বর: রা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।