ঘনশ্যাম কিশোর নয়ন-আনন্দ (ghonoshyam kishor noyon-anondo)
ঘনশ্যাম কিশোর নয়ন-আনন্দ
ব্রজপুর চন্দ শ্রী ব্রজপুর চন্দ।
বনমালা-ভূষিত কৌস্ত্তভ শোভিত
শ্রীচরণে ঝংকৃত নূপুর-ছন্দ॥
অলকা-তিলক-ধারী কানন-বিহারী
শিরে শিখী-পাখা বামে রাধা-প্যারী,
বিকশিত ফুলে যাঁর তনুর সুগন্ধ॥
কদম্ব-মূলে যমুনার কূলে
বাঁশরি বাজায়ে নাচে হেলে দুলে,
যাঁর প্রেমে গোপিনীরা কেঁদে হ'ল অন্ধ॥
সেই হরি মম, সখা প্রিয়তম
(সে) হৃদয়ে উদয় হ'য়ে হাসে মৃদু-মন্দ॥
- ভাবসন্ধান: এই গানে শ্রীকৃষ্ণের অপরূপ সৌন্দর্য, দিব্য লীলা এবং তাঁর প্রতি গোপিনীদের গভীর প্রেমের মহিমা নানা রূপকতায় উপস্থাপন করা হয়েছে।
শ্রীকৃষ্ণের রূপ বর্ণনায় বলা হয়েছে- ঘন মেঘের মতো শ্যামল বর্ণের কিশোর, দর্শনে পরম আনন্দদায়ক। তিনি ব্রজধামের চন্দ্র-স্বরূপ, চন্দ্রের মতই শ্রীময়। তিনি বনফুলের মালায় সজ্জিত এবং তাঁর বক্ষে শোভা পায় কৌস্তভ নামক মহামূল্যবান মণি। তাঁর শ্রীচরণে ঝংকৃত হয় মধুর নূপুর ধ্বনি। তাঁর কপাল তিলক-শোভিত, তাঁর মুখমণ্ডল সুশোভিত কোঁকড়ানো কেশরাশিতে। তিনি বৃন্দাবনের বনে বনে বিহার করেন, তাই তাঁকে কানন-বিহারী বলা হয়েছে। তাঁর মাথায় ময়ূরের পালক (শিখী-পাখা) এবং তাঁর বাম পাশে বিরাজ করেন প্রিয়তমা শ্রীরাধা। দেহ ফুলের সুগন্ধে বিকশিত।
তিনি বৃন্দাবনের কদম গাছের নিচে, যমুনা নদীর তীরে, বাঁশি বাজিয়ে নাচেন হেলে দুলে। গোপিনীরা তাঁর বিরহে এবং তাঁর প্রতি গভীর প্রেমে বাহ্যজ্ঞানশূন্য, আত্মহারা।
এ্ই শ্রীহরিই (শ্রীকৃষ্ণ) কবি প্রিয়তম সখা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কবি তাঁর কল্পলোকের বিহারে অনুভব করেন- সেই পরম প্রিয় শ্রীকৃষ্ণ তাঁর হৃদয়ে আবির্ভূত (উদয়) হয়ে মৃদু-মন্দ হাসিতে তাঁর হৃদয়ে ভরে তোলেন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ৮ তারিখে (২২ ভাদ্র ১৩৪৫) নজরুলের সাথে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির চুক্তি হয়। এই চুক্তিতে গানটি ছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৯ বৎসর ৩ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১২৬৮। পৃষ্ঠা: ৪৮৬]
- রেকর্ড: ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ৮ তারিখে (২২ ভাদ্র ১৩৪৫) নজরুলের সাথে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির চুক্তি হয়। এই চুক্তিতে গানটি ছিল। গানটির কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নি।
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব। কৃষ্ণ। বন্দনা