ঘোমটা-পরা কাদের ঘরের বৌ তুমি ভাই সন্ধ্যাতারা (ghomta-pora kader ghorer bou tumi vai shondhyatara)
রাগ: মালশ্রী. তাল: আড়-খেমটা
ঘোমটা-পরা কাদের ঘরের বৌ তুমি ভাই সন্ধ্যাতারা?
তোমার চোখে দৃষ্টি জাগে হারানো কোন মুখের পারা।
সাঁঝের প্রদীপ আঁচল ঝেঁপে
বঁধুর আসার আশা চেপে,
চাউনিটি কার উঠছে কেঁপে কে জানে কার বইছে ধারা॥
কার হারানো বধূ তুমি অন্ত-পথে মৌন মুখে,
ঘনাও সাঁঝে ঘরের মায়া গৃহহীনের শূন্য বুকে?
এই যে রোজই আসা-যাওয়া,
এমন করুণ মলিন চাওয়া,
কার তরে হায় আকাশ-বধূ তুমিও কি আজ প্রিয়-হারা॥
- রচনাকাল: ছায়ানট কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত এই গানের সাথে গানটি রচনা ও স্থানের নাম উল্লেখ আছে- 'কলিকাতা, কার্তিক ১৩২৭'। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২১ বৎসর ৫ মাস
- ভাবার্থ: এই গানে কবি সন্ধ্যাকাশের সন্ধ্যাতারাকে (শুক্রগ্রহ) উপস্থাপন করেছেন- কল্পলোকের ঘোমটা-পরা আকাশ-বধূর উপমায়। তার চাহনীতে কবি দেখতে পেয়েছেন না পাওয়ার বেদনার মুখশ্রী।
প্রিয়তমের আসার প্রতীক্ষার আশা মনের গভীরের চাপা দিয়ে যেমন সাঁঝের প্রদীপ আঁচলে ঢেকে গহবধু আসে- সন্ধ্যাকাশের সন্ধ্যাতারার চাহনি যেন তেমনটি। সেখানে কবি দেখেন বধুবেশী এই তারার চাহনিতে কার প্রতীক্ষার আশা কম্পিত হয়। এই তারা যেন ঘরাহারা বধূ, মৌন মুখে চলেছে সে অন্তিম পথে। ঘন সন্ধ্যায় তার চলার পথে সে গৃহহীনের মনোলোকে ঘরের মায়া জাগায়। প্রিয়-হারা এই আকাশ-বধু, প্রতি সন্ধ্যায় তার আসা যাওয়ার মাঝে রেখে যায়, তার এই ঘর ফিরে পাওয়ার মলিন প্রত্যাশা।
- পত্রিকা: স্বরমূর্ছনা [কার্তিক ১৩২৭ (অক্টোবর-নভেম্বর ১৯২০) সংখ্যা। সুর ও স্বরলিপি মোহিনী সেনগুপ্তা [নমুনা]
- গ্রন্থ: ছায়ানট প্রথম সংস্করণ [বর্মণ পাবলিশিং হাউস, ২২ সেপ্টেম্বর ১৯২৫ আশ্বিন ১৩৩২] অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। শিরোনাম: সন্ধ্যাতারা।
- শ্রবণ নমুনা
- সুরকার: মোহিনী সেনগুপ্তা
- স্বরলিপি: মোহিনী সেনগুপ্তা [নমুনা]
- পর্যায়: