চলে কুস্মি শাড়ি পরি' বসন্তের পরী (chole kushmi shari pori boshonter pori)
চলে কুস্মি শাড়ি পরি' বসন্তের পরী
নবীনা কিশোরী হেসে হেসে।
হেলিয়া দুলিয়া সমীরণে ভেসে ভেসে॥
রঙ্গীলা রঙ্গে নৃত্য-ভঙ্গে চলিছে চপলা এলোকেশে।
পাপিয়া 'পিয়া পিয়া' ডাকে শাখে তাহারে ভালোবেসে॥
মদির চপল বায়, অঞ্চল উড়ে যায়,
সে বৈকালি সুর যেন চৈতী বেলাশেষে॥
মনে সে নেশা লাগায়, বনে সে আঁখির ইঙ্গিতে ফুল ফোটায়।
বেনুবনে তারি বাঁশি বাজে, তারি নাম গুঞ্জরে ভ্রমর
তার ঝির্ঝির্ মিরমির বাজে মঞ্জির নাচের আবেশে
তার ঝুমুর ঝুমুর নূপুর-ধ্বনি হাওয়াতে মেশে॥
- ভাবার্থ: এই গানে কবি বসন্তকালকে নবীনা বসন্তের কিশোরী পরী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এই গানের পুস্পশোভিত বনরাজি, দখিনা বাতাস, পাতার মর্মর ধ্বনি ভ্রমরের গুঞ্জনধ্বনি, এই সবই কিশোরী পরীর শোভনীয় প্রকাশের রূপকল্প হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে
কবি বসন্তের পুষ্পশোভিত প্রকৃতিকে এই কিশোরী কুসমি শাড়ি নামে আখ্যায়িত করেছেন। দখিনা বাতাসে আন্দোলিত হয় তার শোভা। যেন এই কিশোরী তার এলোকেশে মেলে- হেলে দুলে বাতাসে ভেসে ভেসে চলে, চপল নৃত্যের রঙ্গরসে। পাপিয়া এই বসন্তবালিকাকে ভালোবেসে পিয়া পিয়া ডাকে আহ্বান করে।
মোহনীয় চঞ্চল বাতাসে তার আঁচল উড়ে, সাথে চৈত্র মাসে বেলাশেষের সুর বাজে। গন্ধ-বর্ণ আর সুর-সৌরভে মনে মদির নেশার ঘোরে ঝিমায় প্রকৃতি, আর তার আঁখির ইঙ্গিতে বনরাজি পুষ্পশোভিতা হয়ে ওঠে। তার বাঁশি বাজে বেণুবনে, যেন এই বসন্তের কিশোরীর গুঞ্জরিত হয় ভ্রমর গুণগুণ ধ্বনিতে। প্রকৃতিতে বাজে তার ঝির্ঝির্ মিরমির নৃত্যময় মঞ্জির, তার ঝুমুর ঝুমুর নূপুর-ধ্বনি হাওয়াতে মিশে যায় মোহনীয় আবেশে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৭৭ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাসে (জুলাই-আগষ্ট ১৯৭০) সন্ধ্যামালতী প্রকাশিত হয়েছিল।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১০০৭। পৃষ্ঠা: ৩০৮]
- সন্ধ্যামালতী
- প্রথম সংস্করণ [শ্রাবণ ১৩৭৭ (জুলাই-আগষ্ট ১৯৭১)]
- নজরুল রচনাবলী জন্মশতবার্ষিকী সপ্তম খণ্ড [১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৫, ২৫ মে ২০০৮। সন্ধ্যামালতী, গান ৬৪। পৃষ্ঠা: ১৫৮]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, বসন্ত