অরুণ কিরণ সুধা-স্রোতে, ভাসাও প্রভু মোরে (oruno kiron sudha-srote, bhasao probhu more)
অরুণ কিরণ সুধা-স্রোতে, ভাসাও প্রভু মোরে।
গ্লানি পাপ তাপ মলিনতা, যাক ধুয়ে চিরতরে॥
প্রশান্ত স্নিগ্ধ তব হাসি, ঝরুক অশান্তি প্রাণে বুকে১
প্রভাত আলোর ধারা, যেমন ঝরে সব ঘরে॥
যেমন বিহগেরা জাগি ভোরে, আলোর নেশার ঘোরে
আকাশ পানে ..., বন্দে প্রেম-মনোহরে॥২
১. পাণ্ডুলিপিতে পরিবর্ত লাইন হিসেবে 'সবারে আজ যেন ভালবাসি' লেখা আছে।
২. পাণ্ডুলিপিতে গানটির সঙ্গে কবি-কৃত স্বরলিপি আছে।
- ভাবসন্ধান: পরম প্রভুর সূর্যের জ্যোতির মতো সুধা-স্রোতে কবির সকল গ্লানি পাপ, তাপ, মলিনতা ধুয়ে যাক, এই প্রার্থনা দিয়ে এই গানের শুরু। পরম স্রষ্টার শুভ্র সুন্দর জ্ঞানলোকের অমিয় ধারায় কবি পবিত্র হয়ে উঠুক, এই নিবেদনের সূত্রে গানের বাকি অংশ সঞ্চালিত হয়েছে।
প্রসন্ন ভোরে যেমন করে প্রভাতের আলোক ধারা, জনপদের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে, স্রষ্টার প্রশান্ত স্নিগ্ধ হাসি তেমনি কবির অশান্ত হৃদয়ের উপর বর্ষিত হোক, এটাই তাঁর একান্ত প্রার্থনা।
এই গানের শেষের পঙক্তিটি নজরুলের পাণ্ডুলিপিতে খণ্ডিতভাবে পাওয়া যায়। গানটির সার্বিক বাণীচিত্র অনুসরণে, এই অংশের ভাবানুসন্ধান হিসেবে বলা যায়- আলোর নেশায় ভোরের পাখিরা যেমন করে ভোরে জেগে ওঠে মনোহর গানে, কবিও যেন পরমপ্রভুর স্নিগ্ধ জ্যোতিতে স্নাত হয়ে- তাঁর মনোহর ভোরের পাখির মতই গেয়ে উঠতে পারে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। নজরুলের সুস্থাবস্থায় এই গানটি কোথাও প্রকাশিত হয় নি। আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত 'অপ্রকাশিত নজরুল' গ্রন্থে গানটি নজরুলের হস্তাক্ষর সম্বলিত পাঠ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
- গ্রন্থ:
- অপ্রকাশিত নজরুল। আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত। [হরফ প্রকাশনী]। কলকাতা। ১৭ নভেম্বর ১৯৮৯। ভক্তিগীতি। কুকভ-একতালা। পৃষ্ঠা ৩০৯
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১০১৪। পৃষ্ঠা: ৭৫৩]
- পর্যায়:
- বিষবাঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমসত্তা। প্রার্থনা।