অসীম আকাশ হাত্ড়ে ফিরে খুঁজিস রে তুই কা'কে? (oshim akash hatre fire khujis re tui kake?)
অসীম আকাশ হাত্ড়ে ফিরে খুঁজিস রে তুই কা'কে?
(তোর) দূরের ঠাকুর তোরই ঘরে কাছে কাছে থাকে॥
মা হয়ে সে কোলে করে
পিতা হয়ে বক্ষে ধরে
সে প্রিয় হয়ে বন্ধু হয়ে বিলায় আপনাকে॥
ওরে মন-কানা! তুই দেশে দেশে কোন্ তীর্থে যাবি?
তোর খুল্লে মনের চোখ
কত দেখ্বি নুতন লোক
তোরই আশে পাশে সে যে হাসে দেখ্তে পাবি।
তুই যাকে কেবল ভাবিস মায়া
দেখ্বি তাতেই তাঁহার ছায়া,
শত্রু-মিত্র কত-রূপে ছদ্মবেশে চুপে চুপে সে নাম ভাঁড়িয়ে ডাকে
তোরে নাম ভাঁড়িয়ে ডাকে॥
- ভাবসন্ধান: পরম স্রষ্টার সন্ধান পাওয়ার জন্য মানুষ আকাশে, উপাসনালয়ে, তীর্থক্ষেত্রে অবোধের মতো বৃথাই হাতড়ে মরে। কবি মনে করেন এই খোঁজা অবোধের মতো। কারণ সেই পরমপ্রভু রয়েছে তাঁরই অন্তরে। এই ভাবনা থেকে কবি তাঁর স্বগতোক্তিতে এই গানে তাই ব্যক্ত করেছেন- যাঁরে তিনি অসীম আকাশে খুঁজছেন, সেই দূরের ঠাকুর রয়েছেন তাঁরই মনের ঘরে।
তিনি মা হয়ে কোলে ধারণ করেন আর পিতা হয়ে বক্ষে জড়িয়ে ধরেন। আবার প্রিয় বা বন্ধু হয়ে সকলকে আপন জনের মতো প্রেম দান করেন।
কবি মনে করেন- পরম স্রষ্টার উদ্দেশ্যে যাঁরা তীর্থে তীর্থে ঘুরে বেড়ান, তাঁরা মনকানা। মনের চোখ খুললেই দেখা যায় মনের নুতুন জগৎ। সেখানে তিনি সহাস্যে বিরাজ করেন জীবাত্মার পাশেই। মনে হতে পারে এ সবই মনের মায়া (মোহ বা ছলনা), কিন্তুই সে মায়ার ভিতরে তিনি রয়েছেন ছায়া হয়ে। তিনিই ছদ্মবেশে থেকে চুপি চুপি নাম ভাঁড়িয়ে জীবত্মাকে ডাকেন শত্রু-মিত্র হয়ে নানা রূপে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। গানটি পাওয়া যায় নজরুলের হারানো গানের খাতায় সংগৃহীত পাণ্ডুলিপিতে। নজরুলের সুস্থাবস্থায় এই গানটি কোথাও প্রকাশিত হয় নি।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২৫২৭। গান সংখ্যা ২১৯৭। পৃষ্ঠা: ৬৬০]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমাত্মা। অন্বেষণ।