জয় ব্রহ্ম বিদ্যা শিব-সরস্বতী (joy brohmmo bidya shib-shoroshwoti)

জয় ব্রহ্ম বিদ্যা শিব-সরস্বতী।
জয় ধ্রুব জ্যোতি, জয় বেদবতী॥
জয় আদি কবি, জয় আদি বাণী
চয় চন্দ্রচূড়, জয় বীণাপাণি,
জয় শুদ্ধজ্ঞান শ্রীমূর্তিমতী ॥
শিব! সঙ্গীত সুর দাও, তেজ আশা,
দেবি! জ্ঞান শক্তি দাও, অমর ভাষা।
শিব! যোগধ্যান দাও, অনাশক্তি
দেবী! মোক্ষলক্ষ্মী! দাও পরাভক্তি,
দাও রস অমৃত, দাও কৃপা মহতী ॥

  • ভাবার্থ: এই গানটি নজরুল রচনা করেছিলেন তাঁর সৃষ্ট রাগ 'শিব-সরস্বতী'-এর জন্য। এই গানে তিনি সনাতন হিন্দু ধর্মের দুই দৈবসত্তা- শিব ও সরস্বতী'র বন্দনা করেছেন। কবি, ধ্রুব জ্যোতির্ময় শিব ও বেদবতী (যিনি বেদ বা জ্ঞানকে ধারণ করেন) সরস্বতীর জয় ধ্বনি দিয়ে স্থায়ী রচনা করেছেন।

    সনাতন হিন্দুধর্মের পৌরাণিক আখ্যান অনুসারে- শিব এবং সরস্বতী উভয় আদি জ্ঞান, বাণী, সঙ্গীত, ছন্দকে ধারণ করেন। তাই কবি শুদ্ধজ্ঞানী চন্দ্রচূড় শিব এবং বীণা-ধারিণী শ্রীমূর্তিমতী সরস্বতীকে জয়ধ্বনি দিয়েছেন।

    আভোগে কবি শিবের কাছে প্রার্থনা করেছেন সঙ্গীতের তেজদীপ্ত তাণ্ডব সুর, আর সরস্বতীর কাছে চেয়েছেন অমর (শাশ্বত) ভাষা। শিবের কাছে চেয়েছেন যোগমার্গে বসে ধ্যানের জ্ঞান আর পরম জ্ঞানের শক্তি। সরস্বতীকে মোক্ষলক্ষ্মী (কল্যাণ, পরিত্রাণের অধিষ্ঠাত্রী) হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাই তিনি দেবীর কাছে চেয়েছেন কল্যাণকরী মুক্তির জন্য পরমব্রহ্মের পরম ভক্তি এবং শিল্পের অমৃতরূপী রস। 

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।  'পাঠশালা' নামক পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ পঞ্চম সংখ্যায় (মাঘ ১৩৪৬ বঙ্গাব্দের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ বঙ্গাব্দ)  গানটি স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ৮ মাস।
     
  • গ্রন্থ:
    • নজরুলগীতি-অখণ্ড,হরফ। নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ১৩৯৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৪২৩।
  • পত্রিকা
    • পাঠশালা। তৃতীয় বর্ষ পঞ্চম [মাঘ ১৩৪৬ (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৪০)। স্বরলিপি: জগৎ ঘটক।
  • সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলী:
    • সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম।

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।