এ কী বেদনার উঠিয়াছে ঢেউ দূর সিন্ধুর ‘পারে, নিশীথ-অন্ধকার (e ki bedonar uthiache dheu dur shindhur pare)
এ কী বেদনার উঠিয়াছে ঢেউ দূর সিন্ধুর ‘পারে, নিশীথ-অন্ধকারে।
পূরবের রবি ডুবিল গভীর বাদল-অশ্রু-ধারে, নিশীথ-অন্ধকারে॥
ঘিরিয়াছে দিক ঘন ঘোর মেঘে
পূবালী বাতাস বহিতেছে বেগে,
বন্দিনী মাতা একাকিনী জেগে’ কাঁদিতেছে কারাগারে –
শিয়রের দীপ যত সে-জ্বলায় নিভে যায় বারে বারে॥
মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ নীরব আজিকে মিনার-চূড়ে,
বহে না শিরাজ বাগের নহর, বুলবুল গেছে উড়ে’।
ছিল শুধু চাঁদ, গেছে তরবার
সে-চাঁদও আঁধারে ডুবিল এবার,
শিরতাজ-হারা কাঁদে মুসলিম অস্ত-তোরণ-দ্বারে –
উঠিতেছে সুর বিদায়-বিধুর পারাবার-পরপারে॥
ছিল না সে-রাজা কেঁপেছে বিশ্ব তবু গো প্রতাপে তার,
শত্রু-দুর্গে বন্দী থাকিয়া খোলেনি সে-তরবার।
ছিল এ ভারত তারি পথ চাহি’
বুকে বুকে ছিল তারি বাদশাহী,
ছিল তার তরে ধূলার তখ্ত্ মানুষের দরবারে –
আজি বরষায় তারি তরবার ঝলসিয়ে বারে বারে॥
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের ভাদ্র (আগষ্ট ১৯২৯) মাসে গানটি সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩০ বৎসর ৩ মাস।
- গ্রন্থ:
- সন্ধ্যা।
- প্রথম সংস্করণ [ ভাদ্র ১৩৩৬ (আগষ্ট ১৯২৯)। শিরোনাম ' নিশীথ অন্ধকারে'।
- নজরুল-রচনাবলী─চতুর্থ খণ্ড [বাংলা একাডেমী। ২৫ মে, ২০০৭। সন্ধ্যা। শিরোনাম ' নিশীথ অন্ধকারে ' । পৃষ্ঠা: ৭৮-৭৯]
- সন্ধ্যা।