জাগো মালবিকা ! জাগো মালবিকা ! (jago malobika! jago malobika)
জাগো মালবিকা ! জাগো মালবিকা!
ডাকে তোমায় গগন-সীমায় মেঘ-বালিকা॥
বরষার মিনতি মানো, মেঘপানে ভুরু হানো,
বন-ডালি ভরি' আনো নীপ-যূথিকা॥
তব অবগুণ্ঠন খোলো, তমাল ঝুলনায় দোলো,
তরঙ্গ-লহরি তোলো সাগরিকা॥
- ভাবার্থ: কালিদাসের মালবাগ্নিমত্র নাটিকার নায়িকা মালবিকাকে কবির মানসসুন্দরী হিসেবে বর্ষারানী হিসেবে জেগে ওঠার আহবান করা হয়েছে এই গানে। এই গানের মালবিকা নায়িকারূপিণী বর্ষার প্রতীক, যার স্পর্শে প্রকৃতি বর্ষারাণী হিসেবে আবির্ভূতা হয়। এই মালবিকা অনেকটা ঋতু-আবর্তনে বর্ষার দেবী। কিন্তু এ দেবী ভিক্তির নয়, যেন বর্ষার সৌন্দর্য-উৎস। এই মালবিকা নায়িকা, কিন্তু শৃঙ্গার রসের সিক্তা নয়। শুধুই বর্ষার অতুলনীয়া সৌন্দর্যনন্দিনী।
কবি তাঁর এই মানসনায়িকা যেন বর্ষণের জন্য তীর্যক ভ্রূবিভঙ্গে মেঘলোকে আঘাত করে- কবি এই মিনতি রাখেন এই তার কাছে। তিন কামনা করেন- এই বর্ষাসুন্দরী সুসজ্জিতা হয়ে উঠুক বনভূমির ডালিকা ভরা কদম-যূথীর পুষ্পসম্ভারে। ঋতু বৈচিত্র্যের ঘোমটার আড়ালে যে বর্ষা লুকিয়ে ছিল, তার অবগুণ্ঠন উন্মোচিত করে ঝুলনের রাধিকার মতো- মালবিকা জেগে উঠুক। তার সে দোলনের দোলায় সাগরে জেগে উঠুক তরঙ্গলহরি। - রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪২), টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৬ মাস।
- রেকর্ড: টুইন [ডিসেম্বর ১৯৩৫ (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪২)। এফটি ৪১৭১। শিল্পী কুমারী পদ্মরাণী গাঙ্গুলী। সুর: সুরেশ চক্রবর্তী। রাগ- আনন্দী। [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: সুধীন দাশ। [ নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, পঞ্চম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা] ১১ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৭২-৭৩। [নমুনা]
- সুরকার: সুরেশ চক্রবর্তী।
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (ঋতু, বর্ষা)
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- রাগ: আনন্দী
- তাল: কাহারবা
- গ্রহস্বর: রসা।