ঝড় এসেছে ঝড় এসেছে কাহারা যেন ডাকে (jhor eshechhe jhor esheche kahara jeno dake)
ঝড় এসেছে ঝড় এসেছে কাহারা যেন ডাকে।
বেরিয়ে এলো নতুন পাতা পল্লবহীন শাখে॥
ক্ষুদ্র আমার শুক্নো ডালে
দুঃসাহসের রুদ্র ভালে
কচি পাতার লাগলো নাচন ভীষণ ঘূর্ণিপাকে॥
স্থবির আমার ভয় টুটেছে গভীর শঙ্খ-রবে,
মন মেতেছে আজ নতুনের ঝড়ের মহোৎসবে।
কিশলয়ের জয়-পতাকা
অন্তরে আজ মেল্লো পাখা
প্রণাম জানাই ভয়-ভাঙানো অভয়-মহাত্মাকে॥
- ভাবার্থ: গ্রীষ্মের ঝড়ের উপমার ভিতর দিয়ে কবি নব জাগরণের আশাব্যঞ্জক উদ্দীপনাকে প্রকাশ করেছেন এই গানে। কবি আগত ঝড়ের ভিতরে অচেনা কারোর নব জাগরণের আহ্বান শুনতে পান। যার আহ্বানে গ্রীষ্মের পল্লবহীন শাখায় বেরিয়ে আসে নব জাগরণের নতুন পাতা। দুঃসাহসের রুদ্র ললাটের মাঝে নবসৃষ্টির জয়তিলকে মতো- কবির প্রাণহীন শুকনো চেতনাহীন-শাখায় নতুন আশা-পল্লব জেগে ওঠে।
যে প্রাণহীন, চেতনাহীন দশায় ভীত কবির চিত্ত স্থবির হয়েছিল, দূরন্ত ঝড়ের শব্দ- বিজয়ের শঙ্খরব হয়ে তাঁকে অভয় দান করেছে। তাই প্রকৃতির ঝড় আর কবির নব চেতনার বিপ্লবী ঝড় একাকার হয়ে গেছে। উভয়ই কল্যাণের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। এই ঝড়ের শেষে কবি নব কিশলয়ের মধ্যে দেখতে পান, তাঁর চেতনার গভীর তলে নব জাগরণের উড্ডীন জয় পতাকা। তাই কবি এই কবি ভয় ভাঙানো ঘূর্ণিঝড়কে সকৃতজ্ঞ প্রণাম জানিয়েছেন। কারণ তিনি মনে করেন- এই দুরন্ত ঝড় না এলে তার ভিতরে নবজাগরণে দ্রোহী দুঃসাহসের জন্ম হতো না।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার, ১ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ), এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির সাথে কয়েকটি গান প্রকাশের জন্য নজরুলের একটি চুক্তি হয়। এই চুক্তিপত্রে এই গানটির উল্লেখ ছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৪ মাস।
- রেকর্ড:
- এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির সাথে নজরুলের চুক্তি। ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ (মঙ্গলবার, ১ আশ্বিন ১৩৪১)।
- এইচএমভি [এপ্রিল ১৯৩৬ ( চৈত্র ১৩৪২-বৈশাখ ১৩৪৩)। এন ৯৭০৭। শিল্পী: গোপাল সেন] [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: রশিদুন্ নবী । নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (দশম খণ্ড)। প্রথম প্রকাশ, ৩ ফাল্গুন, ১৩৯৯ বঙ্গাব্দ/ ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দ। ১১ সংখ্যক গান] [নমুনা]
- পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (গ্রীষ্ম, উদ্দীপনা)
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল: কাহারবা
- গ্রহস্বর: সগা