তব মুখখানি খুঁজিয়া ফিরি গো (tobo mukhokhani khujiya firi go)

তব মুখখানি খুঁজিয়া ফিরি গো সকল ফুলের মুখে
ফুল ঝ'রে যায় তব স্মৃতি জাগে কাঁটার মতন বুকে॥
           তব প্রিয় নাম ধ'রে ডাকি
           ফুল সাড়া দেয় মেলি' আঁখি
তোমার নয়ন ফুটিল না হায় ফুলের মতন সুখে॥
তোমার বিরহে আমার ভুবনে ওঠে রোদনের বাণী,
কানাকানি করে চাঁদ ও তারায় জানি গো তোমারে জানি।
           খুঁজি বিজলি প্রদীপ জ্বেলে'
           কাঁদি ঝঞ্ঝার পাখা মেলে'
অন্ধ-গগনে আঁধার মেঘের ঢেউ ওঠে মোর দুখে॥

  • ভাবার্থ: কোনো এক বিরহীকাতর প্রেমিকের হারানো প্রিয়াকে পাওয়ার আকুতি এই গানে ফুটে উঠেছে। প্রেমিক তাঁর প্রেমিকার ছায়া দেখতে পান প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের মধ্যে। গানটির স্থায়ীতে দেখতে পাওয়া যায়- ফুলের সৌন্দর্যের ভিতরে প্রেমিক তাঁর প্রিয়ার মুখ-সৌন্দর্য অন্বেষণ করেছেন। ফুল তার সকল সৌন্দর্য হারিয়ে যখন ঝরে পড়ে তখন তার শুধু কাঁটাই পড়ে থাকে। তেমনি হারানোর প্রিয়ার প্রেম-পুষ্প হারিয়ে যাওয়ার পর, প্রেমিকের কাছে সে প্রেম-স্মৃতি ঝরে পড়া ফুলের কাঁটা হয়ে হৃদয়কে বিদ্ধ করছে।

    প্রেমিক তাঁর কল্পনায় দেখতে পান- তাঁর প্রিয়ার নাম ধরে ডাকলে- প্রেমের পাপড়ি মেলে ফুলেরা সাড়া দেয়। তবু তাঁর স্মৃতিপটের হারানো প্রিয়া সে ডাকে নয়ন মেলে সাড়া দেয় দেয় না। অন্তরায় বিধৃত এই আক্ষেপ, আবেগপ্রবণ প্রেমিকার মনবেদনাকে প্রকাশ করে।

    প্রেমিকের বিরহের তাঁর প্রেমজগতে রোদনের বাণী জেগে ওঠে। প্রেমিক তাঁর কল্পলোকে দেখতে পান, যেন চন্দ্র-তারকা তাঁর ব্যথায় ব্যথিত হয়ে সাড়া দেয়। তবু প্রেমিক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ অন্ধকার ঘন মেঘেঢাকা রাতে বিজলির প্রদীপ জ্বেলে প্রেমিকাকে খুঁজে ফেরেন। প্রেমিক মানসলোকে দেখতে পান- যেন তাঁর বিরহ-বেদনা তরঙ্গিত হয়ে অন্ধ-গগনের আঁধার মেঘমালাকে আলোড়িত করে।
     
  • রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪৮) মাসে  গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল এইচএমভি। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪২ বৎসর ৬ মাস।
  • গ্রন্থ
    • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২) -এর ১৭৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৭২-৭৩। ]
     
  • রেকর্ড: এইচএমভি। ডিসেম্বর ১৯৪১ (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪৮) এন ২৭২২৭। সুরকার ও শিল্পী: কমল দাশগুপ্ত ।  [শ্রবণ নমুনা]
     
  • রেকর্ড: এইচএমভি। ডিসেম্বর ১৯৪১ (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪৮) এন ২৭২২৭। সুরকার ও শিল্পী: কমল দাশগুপ্ত ।
     
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: রশীদুন্ নবী।  নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (৩৯ খণ্ড)। প্রথম প্রকাশ,জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বঙ্গাব্দ/ জুন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে। ১৬ সংখ্যক গান] [নমুনা]
  • সুরকার: কমল দাশগুপ্ত
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রেম
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের গান ।

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।