এসো এসো এসো ওগো মরণ (esho esho esho ogo moron)

                        'মরণ-বরণ'
             এসো এসো এসো ওগো মরণ!
এই        মরণ-ভীতু মানুষ-মেষের ভয় করে গো হরণ॥
             না বেরিয়েই পথে যা'রা পথের ভয়ে ঘরে
            বন্ধ-করা অন্ধকারে মরার আগেই মরে,
তাতা     থৈ থৈ তাতা থৈ থৈ তাদের বুকের 'পরে-
ভীম      রুদ্রতালে নাচুক তোমার ভাঙন-ভরা চরণ॥
                    দীপক রাগে বাজাও জীবন-বাঁশি
                    মড়ার মুখেও আগুন উঠুক হাসি'।
            কাঁদে পিঠে কাঁদে যথা শিকল জুতোর ছাপ
            নাই সেখানে মানুষ সেথা বাঁচাও মহাপাপ,
সে        দেশের বুকে শ্মাশান মশান জ্বালুক তোমার শাপ,
সেথা     জাগুক নবীন সৃষ্টি অবার হোক নব নাম-করণ॥
                     হাতের তোমার দণ্ড উঠুক কেঁপে',
                    এবার দাসের ভুবন ভবন ব্যেপে'।
            মেষগুলোকে শেষ ক'রে দেশ-চিতার বুকে নাচো!
            শব ক'রে আজ শয়ন, হে শিব, জানাও তুমি আছ।
            মরায় ভরা ধরায়, মরণ! তুমিই শুধু বাঁচো-
এই       শেষের মাঝেই অশেষ তুমি, করছি তোমায় বরণ॥
                    জ্ঞান-বুড়ো ঐ বলছে জীবন মায়া,
                    নাশ কর ঐ ভীরুর কায়া ছায়া!
            মুক্তি-দাতা মরণ! এসো কাল-বোশেখির বেশে;
            মরার আগেই মরলো যারা, নাও তাদের এসে।
            জীবন তুমি সৃষ্টি তুমি জরা-মরার দেশে,
তাই     শিকল বিকল মাগ্‌ছে তোমার মরণ-হরণ-শরণ॥

  • রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। গানটি 'বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা'র 'কার্তিক ১৩২৮' অক্টোবর-নভেম্বর ১৯২১  সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। ধারণা করা হয়, গানটি আশ্বিন মাসে রচিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২২ বৎসর ৫ মাস।
     
  • পত্রিকা:
  • গ্রন্থ: 
    •  বিষের বাঁশী'
      • প্রথম সংস্করণ [১৬ই শ্রাবণ ১৩৩১ বঙ্গাব্দ (শুক্রবার ১ আগষ্ট ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দ)। শিরোনাম: মরণ-বরণ]
      • নজরুল রচনাবলী। জন্মশতবর্ষ সংকলন প্রথম খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৩, মে ২০০৬। শিরোনাম: মরণ-বরণ। গান। পৃষ্ঠা: ১২৩-১২৪।
         
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
  • সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: স্বদেশ
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।