ত্রিভুবনবাসী যুগল মিলন দেখরে দেখ চেয়ে (trivubonbashi jugol milon dekh re dekh cheye)
ত্রিভুবনবাসী যুগল মিলন দেখরে দেখ চেয়ে
পাহাড়ি বাবার পাশে রাজদুলালী মেয়ে॥
দেবতা মোদের হর পরম মনোহর
হরমনোহারিণী তার চেয়ে সুন্দর
যেন জরে রূপের পাগল ঝোরা ধবল গিরি বেয়ে॥
বরফের পাহাড় ঘিরে ভোরের সোনার আলো
আছে থির হয়ে যেন দেখে চোখ জুড়াল;
চাঁদ যেন লো লতা হয়ে (আছে) চন্দ্রচূড়ে ছেয়ে॥
- ভাবসন্ধান: মন্মথ রায়ের রচিত 'সতী ' নাটকের এই শিব-পার্বতীর মিলন ঘটে বহুদিন পর। এই যুগল মূর্তি দর্শনে অভিভূত কৈলাসবাসী শিবের অনুচর নন্দী। সে কিরাত, কিরাতিনী, ভূত প্রেত সবাইকে এই যুগল মূর্তি দেখার সৌভাগ্য লাভের আশায় আহ্বান করেছেন। মূলত এই গানের মধ্য দিয়ে শিব-সতীর যুগলমূর্তির সৌন্দর্য-মহিমা উপস্থান করা হয়েছে।
পাহাড়ের বাবা (শিব) ও রাজদুলালী মেয়ের (সতী) যুগল মিলন দেখে অভিভূত নন্দী কৈলাসবাসীদের আহ্বান করছেন। এঁদের দেবতা হর (শিব) পরম মনোহর, তার চেয়ে অধিকতর মনোহরা হলেন হরের মনোহারিণী সতীর। উভয়ের যুগলরূপের সৌন্দর্য যেন ধবলগিরি বেয়ে উচ্ছল ঝর্না হয়ে ঝরে পড়ছে। তারই আভা খেলা করছে বরফের পাহাড়ের কোল জুড়ে ভোরের সোনালী আলোর মহিমা হয়ে, যেন সে সৌন্দর্য স্থির হয়ে বিরাজ করছে চিরন্তনরূপে। চন্দ্রানী হয়ে সতী যেন চন্দ্রচূড়কে (শিবকে) আচ্ছন্ন করেছে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল (বুধবার, ১৫ বৈশাখ ১৩৪৪), মন্মথ রায়ের রচিত 'সতী' নাটক নাট্যনিকেতন নামক রঙ্গালয়ে মঞ্চস্থ হয়। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ১১ মাস।
- মঞ্চ নাটক: সতী (নাটক)। রচয়িতা মন্মথ রায় । [নাট্যনিকেতন। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল (বুধবার, ১৫ বৈশাখ ১৩৪৪)। চরিত্র: কৈলাসবাসীদের গান]
- গ্রন্থ:
- 'সতী ' । নাটক। তৃতীয় অঙ্ক। তৃতীয় দৃশ্য। কৈলাসবাসীদের গান। মন্মথ রায় নাট্য গ্রন্থাবলী। ষষ্ঠ খণ্ড। মনমথন প্রকাশন। ১৩৬৫ বঙ্গাব্দ (১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ)। পৃষ্ঠা: ২৫৯
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইন্সটিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১১। গান সংখ্যা ১৯৪২।
- সুরকার: নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দধর্ম। শাক্ত। শিব-সতীর যুগল রূপ বন্দনা।
-