দক্ষিণ সমীরণ সাথে বাজো বেণুকা (dokkhin shomirono shathe bajo benuka)
দক্ষিণ সমীরণ সাথে বাজো বেণুকা।
মধু-মাধবী সুরে চৈত্র-পূর্ণিমা রাতে, বাজো বেণুকা॥
বাজো শীর্ণা-স্রোত নদী-তীরে
ঘুম যবে নামে বন ঘিরে’
যবে ঝরে এলোমেলো বায়ে ধীরে ফুল-রেণুকা॥
মধু-মালতী-বেলা-বনে ঘনাও নেশা
স্বপন আনো জাগরণে মদিরা মেশা।
মন যবে রহে না ঘরে
বিরহ-লোকে সে বিহরে
যবে নিরাশার বালুচরে ওড়ে বালুকা॥
- ভাবার্থ: এই গানের প্রাকৃতিক প্রেক্ষাপট বসন্ত ঋতু। এই ঋতুর সৌন্দর্য বৈভবে কবি মুগ্ধ । তাঁর মনের বাঁশি বাজে, বসন্তের নানা রূপবৈচিত্র্যের বিহারে। কবি তাঁর মনোবাঁশির সুরে সকল রূপবৈচিত্র্যের উপভোগ করতে চান, তাই তাঁর মনো-বাঁশিকে অনুরোধ করেছেন অবাধ সুরবিহারে এই গানে।
কবি কামনা করেন- বসন্তের দখিনা বাতাসে সাথে তাঁর বেণুকা, চৈত্র-পূর্ণিমা রাতে মধু-মাধবী (মধুমাধবী সারং) রাগে বেজে উঠুক। বসন্তের শীর্ণা-স্রোতা নদী-তীরে যখন বন-বনান্তে ঘুম নেমে আসে, যখন বসন্তের এলোমেলো বাতাসে ফুল-রেণুকা ঝরে পড়ে, তখন তাঁর মনোবেণুকা বেজে উঠুক।
কবি কামনা করেন, মধু-মালতি ও বেলার সৌন্দর্য ও সৌরভের মোহনীয় নেশায়- স্বপ্ন নেমে আসুক জাগরণে । যখন উদাসী মন বিবাগী হয়ে বিরহ-লোকে বিচরণ করে, যখন নিরাশার বালুচরে এলোমেলো বালুকার মতো তাঁর কামনা ব্যর্থ হয়ে ঘুরে মরে- তখন বেজে উঠুক তাঁর মনোবাঁশী।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ভারতবর্ষ পত্রিকার মাঘ ১৩৪২ (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬) সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৮ মাস।
- বেতার: সারঙ্গ রঙ্গ (গীতি আলেখ্য. সারঙ্গ অঙ্গের রাগভিত্তিক অনুষ্ঠান)
- প্রথম প্রচার: অন্তর্ভুক্ত হয় নি
- দ্বিতীয় প্রচার: কলকাতা বেতার কেন্দ্র। ২৩ নভেম্বর ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ (শনিবার ৭ অগ্রহায়ণ ১৩৪৭)। তৃতীয় অধিবেশন। ৮.০০-৮.৩৯।
[সূত্র: বেতার জগৎ। ১১শ বর্ষ ২২ সংখ্যা। পৃষ্ঠা: ১২৮৬]
- রেকর্ড: এইচএমভি । মার্চ ১৯৩৬ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৪২)। এন ৭৪৯৬। শিল্পী: মৃণালকান্তি ঘোষ [শ্রবন নমুনা]
- পত্রিকা: ভারতবর্ষ। মাঘ ১৩৪২। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬। কথা ও সুর: নজরুল ইসলাম। স্বরলিপিকার: জগৎ ঘটক। মধুমাধবী সারং-ত্রিতালী। পৃষ্ঠ: ২০১-২০২] [নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- জগৎ ঘটক [ভারতবর্ষ। মাঘ ১৩৪২। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬] [নমুনা]
- আহসান মুর্শেদ [ নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, ছাব্বিশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। আশ্বিন, ১৪১২ বঙ্গাব্দে /সেপ্টেম্বর ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ] ১১ সংখ্যক গান। [নমুনা][নমুনা]
- সুরকার: নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, ঋতু বসন্ত
- সুরাঙ্গ: খেয়ালাঙ্গ
- তাল: ত্রিতাল
- গ্রহস্বর:
- র্সণা [জগৎ ঘটক-কৃত স্বরলিপি]
- পা [আহসান মুর্শেদ-কৃত স্বরলিপি]