দুলিবি কে আয় মেঘের দোলায় (dulibi ke ay megher dolay)
দুলিবি কে আয় মেঘের দোলায়।
কুসুম দোলে পাতার কোলে পূবালী হাওয়ায়॥
অলকা-পরী অলক খু’লে
কাজরী নাচে গগন-কূলে,
বলাকা-মালার ঝুলন ঝুলায়॥
দাদুরী বোলে, ডাহুকী ডাকে
ময়ূরী নাচে তমাল শাখে
ময়ূর দোলে কদম-লতায়॥
তটিনী দুলে ঢেউয়ের তালে,
নিবিড় আঁধার ঝাউয়ের ডালে,
বেণুর ছায়া ঘনায় মায়া পরান ভোলায়॥
- ভাবার্থ: কবি এই গানে বর্ষাকে অনুভব করেছেন নৃত্যশীলার মোহনীয় সৌন্দর্যে চোখে। সে নাচের ছন্দের দোলা দোলে সমগ্র চরাচর জুড়ে। এরই আবেশে কবির চিত্তে জেগেছে নৃত্যোৎসবের আমেজ। যেমন করে পুবালি বাতাসে পাতার কোলে ফুলেরা দোলা খায়, তেমনি করে মেঘের দোলনায় দোলায়িত হতে সবাইকে আহবান করা হয়েছে এই গানে।
বর্ষার এই দোলোৎসবে যেন কোনো এক অদেখা পরী আকাশে এলোকেশ ছড়িয়ে কাজরি নাচে, বলাকার সারি গাঁথা-মালা হয়ে যেন ঝাঁক বেঁধে দুলতে দুলতে উড়ে যায়। ব্যাঙ ও ডাহুকির ডাকের দোলে তমালশাখায় ময়ূরী নাচে। তা দেখে কদম তলায় ময়ূর দোলে। ঝাউ-বনের ডালে নিবিড় আঁধারে নাচে, বেণু বনের ছায়া দোলে। সব মিলিয়ে কবি চিত্তে ঘনিয়ে ওঠে পরান-ভুলানো মোহমায়া।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। 'গুলবাগিচা' গীতি-সংকলনের প্রথম সংস্করণে [১৩ আষাঢ় ১৩৪০, ২৭ জুন ১৯৩৩] অন্তর্ভুক্ত হয়ে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৪ বৎসর ১ মাস
- গ্রন্থ:
- গুলবাগিচা
- প্রথম সংস্করণ [১৩ আষাঢ় ১৩৪০, ২৭ জুন ১৯৩৩। দেশ মিশ্র-দাদরা। পৃষ্ঠা: ৪২]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংকলন। পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১। গুল-বাগিচা। গান সংখ্যা ৩৭। দেশ মিশ্র-দাদরা। পৃষ্ঠা ২৪৬]
- গুলবাগিচা
- রেকর্ড: মেগাফোন [জুন ১৯৩৩ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪০)। জেএনজি ৫৯। শিল্পী: কমলা ভট্টাচার্য।]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- আহসান মুর্শেদ। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি ছেচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট । ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি ২০১৯] পৃষ্ঠা: ৪৯-৫১। [নমুনা]
- আহসান মুর্শেদ। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি ছেচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট । ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি ২০১৯] পৃষ্ঠা: ৪৯-৫১। [নমুনা]
- পর্যায়: