এসো হৃদি-রাস-মন্দিরে এসো হে রাসবিহারী কালা (esho hridi-ras-mondire)

এসো হৃদি-রাস-মন্দিরে এসো হে রাসবিহারী কালা।
মম নয়নের পাতে রাখিয়াছি গেঁথে অশ্রু-যূথীর মালা॥
       আমি   ত্যাজিয়াছি কবে লাজ-মান-কুল
                বহি' কলঙ্ক এসেছি গোকুল,
আমি ভুলিয়াছি ঘর শ্যাম নটবর কর মোরে গোপবালা॥
                আমার কাঁদন-যমুনার নদী
    শ্যাম হে   ভাঁটি টানে শুধু বহে নিরবধি,
তারে বাঁশরির তানে বহাও উজানে ভোলাও বিরহ-জ্বালা॥

  • ভাবসন্ধান: এই গানটিতে কোনো এক কৃষ্ণ-অনুরাগিনী গোকুলে ছুটে এসেছেন কৃষ্ণের প্রেমে ছুটে এসেছেন তাঁর সাথে মিলনের কামনায়। কৃষ্ণের সাথে তাঁর এই মিলনের আকুলতা উপস্থাপিত হয়েছে রাধার অভিব্যক্তিতে।

    কৃষ্ণ-অনুরাগিনী তাঁর হৃদি-রাস-মন্দিরের  (হৃদয়-রূপ রাসমন্দির) রাসোৎসবের মধ্যমণি হিসেবে রাসবিহারী কৃষ্ণকে আহ্বান করেছেন। তিনি কৃষ্ণের জন্য অশ্রূরূপ যূথির মালা সৃজন করে ধারণ করেছেন তাঁর সজল নয়নে। কৃষ্ণের জন্য তিনি ত্যাগ করেছেন লাজ-মান-কুল। কলঙ্কের দুর্নাম অগ্রাহ্য করে তিনি গোকুলে এসেছেন শুধুই কৃষ্ণের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য।  ঘর ত্যাগিনী এই কৃষ্ণ-অনুরাগিনীর একান্ত কামনা তিনি যেন তাঁকে বৃন্দাবনের গোপবালা করে কাছে টেনে নেন।

    তাঁর এই ক্রন্দন বহমান যুমনার মতো। সেখানে প্রেমের উজান বয় না, তাই তিনি শুধুই ভাটির টানে কৃষ্ণ-প্রেম থেকে দূরে সরে যান। কৃষ্ণের কাছে তাঁর একান্ত নিবেদন, যেন তাঁর বাঁশির সুরে তাঁর প্রেম-যমুনাকে উজানের পথে উদ্বেলিত করে, তাঁর বিরহযন্ত্রণার অবসান ঘটান।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ) মাসে  টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ১ মাস।
     
  • গ্রন্থ:
    • বনগীতি
      • প্রথম সংস্করণ  ১৩ অক্টোবর ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দ (রবিবার ২৭ আশ্বিন ১৩৩৯)। ঝিঁঝিট-একতাল। পৃষ্ঠা: ৪৫।
      • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১। বনগীতি। ২৯ সংখ্যক গান। ঝিঁঝিট-একতালা।  পৃষ্ঠা ১৯৫]
    • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১১৯৭।  রাগ: ঝিঁঝিট, তাল: একতাল পৃষ্ঠা: ২৯০।
       
  • রেকর্ড: টুইন।  জুন ১৯৩২ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ)। এফটি ২০৩০। শিল্পী: জীবনানন্দ গোস্বাম
     
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: আহসান মুর্শেদ  [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, একচল্লিশতম খণ্ড, অগ্রহায়ণ ১৪২৪] গান সংখ্যা ৩। পৃষ্ঠা: ২৫-২৮ [নমুনা]
     
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব সঙ্গীত। কৃষ্ণ। আত্মনিবেদন
    • সুরাঙ্গ: ভজন

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।