ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ (o mon romjaner oi rojar seshe elo khushir eid)
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন্ আসমানি তাগিদ॥
তোর সোনা-দানা বালাখানা সব রাহেলিল্লাহ্।
দে জাকাত মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিদ্॥
আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে।
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ॥
আজ ভুলে যা তোর দোস্ত ও দুশমন হাত মিলাও হাতে।
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরিদ॥
ঢাল হৃদয়ের তোর তশ্তরিতে শির্নি তৌহিদের।
তোর দাওয়াত কবুল করবে হজরত হয় মনে উম্মীদ॥
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের ফ্রেব্রুয়ারি (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩২ বৎসর ১০ মাস।
এই গানটি রচনার প্রসঙ্গে আব্বাসউদ্দীন আহমদ তাঁর 'আমার শিল্পী জীবনের কথা' গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ইসলামী গানের রেকর্ড প্রকাশের ক্ষেত্রে গ্রামোফোন কোম্পানির রিহাসর্সল-ইন চার্জ ভগবতী ভট্টাচার্য রাজী ছিলেন না। এ নিয়ে আব্বাসউদ্দীন তাঁকে অনুরোধ করার পর, ভগবতী বাবু প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পরে একদিন গ্রামোফোন কোম্পানির রিহাসর্সল রূপে আব্বাসউদ্দীন তাঁকে দ্বিতীয়বার অনুরোধ করেন। এবারে বগবতী বাবু রাজী হন। এ প্রসঙ্গে 'আমার শিল্পী জীবনের কথা' [পরিবেশনা: হরফ প্রকাশনী, কলকাতা। পৃষ্ঠা: ৭৩] গ্রন্থে তিনি লিখেছেন-- '...আমি কাজিদাকে বললাম যে ভগবতীবাবু রাজী হয়েছেন। তখন সেখানে ইন্দুবালা কাজিদার কাছে গান শিখছিলেন। কাজিদা বলে উঠলেন, ইন্দু তুমি বাড়ী যাও, আব্বাসের সাথে কাজ আছে।" ইন্দুবালা চলে গেলেন এক ঠোংগা পান আর চা আনতে বললাম দশরথকে। তারপর দরজা বন্ধ করে আধঘণ্টার ভিতরই লিখে ফেললেন- ' ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ।" তখুনি সুরসংযোগ করে শিখেয়ে দিলেন। পরের দিন ঠিক এই সময় আসতে বললেন। পরের দিন লিখলেন, "ইসলামের ঐ সওদা লয়ে এলো নবীন সওদার।"
আব্বাসউদ্দীনের এই বক্তব্য অনুসারে- 'ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ' এই সময়ে রচিত হলেও, আলোচ্য গানটি এই সময়ের রচিত নয়। কারণ, এই গানটি জয়তী পত্রিকার কার্তিক-পৌষ ১৩৩৮ (অক্টোবর-ডিসেম্বর ১৯৩১) সংখ্যায় পূর্বেই প্রকাশিত হয়েছিল। সম্ভবত এইচএমভিতে ' ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ" গানটি প্রকাশের সময় এর জুড়ি গান হিসেবে পূর্বে রচিত আলোচ্য গানটিতে সুরারোপ করেছিলেন।
- '...আমি কাজিদাকে বললাম যে ভগবতীবাবু রাজী হয়েছেন। তখন সেখানে ইন্দুবালা কাজিদার কাছে গান শিখছিলেন। কাজিদা বলে উঠলেন, ইন্দু তুমি বাড়ী যাও, আব্বাসের সাথে কাজ আছে।" ইন্দুবালা চলে গেলেন এক ঠোংগা পান আর চা আনতে বললাম দশরথকে। তারপর দরজা বন্ধ করে আধঘণ্টার ভিতরই লিখে ফেললেন- ' ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ।" তখুনি সুরসংযোগ করে শিখেয়ে দিলেন। পরের দিন ঠিক এই সময় আসতে বললেন। পরের দিন লিখলেন, "ইসলামের ঐ সওদা লয়ে এলো নবীন সওদার।"
রেকর্ড বুলেটিনে মন্তব্য ছিল- "আর একটি অভাব এতদিনে দূর হইল। বাংলা ভাষায় ইসলামী ধর্ম বিষয়ক রেকর্ডের জন্য অনুগ্রাহক বর্গ যেরূপ উৎসুক হইয়া আছেন উক্ত রেকর্ডখানি ততোধিক তৃপ্তি দিবে ইহাতে সন্দেহ নাই। এরূপ রেকর্ড আমাদের তালিকায় প্রথম।"
- গ্রন্থ:
- জুলফিকার।
- প্রথম সংস্করণ [১৫ অক্টোবর ১৯৩২ (শনিবার ২৯ আশ্বিন ১৩৩৯)। পিলু-কার্ফা]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৪, মে ২০০৭। ৭ সংখ্যক গান। পিলু-কার্ফা। পৃষ্ঠা: ২৯৩-২৯৪]
- জুলফিকার।
- রেকর্ড: এইচএমভি ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৩৮)। এন ৪১১১। শিল্পী: আব্বাসউদ্দীন আহমদ। [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি চুয়াল্লিশততম খণ্ড। স্বরলিপি নজরুল ইন্সটিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত। আষাঢ় ১৪২৪/জুন ২০১৮] পৃষ্ঠা: ১৭-২১। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ভক্তি [ইসলাম]
- সুরাঙ্গ: কাওয়ালি
- তাল: কাহারবা
- গ্রহস্বর: স