নাই চিনিলে আমায় তুমি রইব আধেক চেনা (nai chinile amay tumi roibo adhek chena)

নাই চিনিলে আমায় তুমি রইব আধেক চেনা।
চাঁদ কি জানে কোথায় ফোটে চাঁদনি রাতে হেনা॥
           আধো আঁধার আধো আলোতে
           একটু চোখের চাওয়া পথে 

জানিতাম তা ভুলবে তুমি, আমার আঁখি ভুলবে না॥
আমার ঈষৎ পরিচয়ের এই সঞ্চয় লয়ে
হয় না সাহস কোথায় যাব মনের কথা কয়ে।
           একটু জানার মধু পিয়ে
           বেড়াই কেন গুন্‌গুনিয়ে 

তুমি জান, আমি জানি, আর কেহ জানে না॥

  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার, ১ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির সাথে কয়েকটি গান প্রকাশের জন্য নজরুলের একটি চুক্তি হয়। এই চুক্তিপত্রে এই গানটির উল্লেখ ছিল।

    এই গানের রচনার উৎস সম্পর্কে জানা যায়- আসাদুল হকের রচিত 'নজরুলের শ্রুতিধর ধীরেন দাস' গ্রন্থ থেকে। এই গ্রন্থের ৫৩ পৃষ্ঠায় ধীরেন দাসের স্মৃতিচারণ অনুসারে উল্লেখ করা হয়েছে-

 "আমি [ধীরেন্দ্রনাথ দাস] এ সময় কোলকাতা বেতারের নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী ছিলাম। প্রতি মাসেই একাধিকবার আমাকে গান পরিবেশন করতে হতো। একদিনের কথা, আমি গান পরিবেশন করে স্টুডিও থেকে বের হয়ে যাচ্ছি এমন সময় বেতার অফিসের ডিউটি অফিসার আমাকে ডেকে নিয়ে একটি এনভেলপ দিয়ে বললেন কয়েকদিন আগে চিঠিটি বেতার অফিসের ঠিকানায় এসেছে। তাঁর হাত থেকে চিঠিটি নিয়ে আমি রাস্তায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাম গাড়ীতে বসে যেতে যেতে চিঠিটি খুলে পড়তে লাগলাম। রেডিওতে আমার গান শুনে কোন প্রেমিকা যুবতী আমার প্রেমে পড়েছে ও আমাকে তার প্রেম নিবেদন করেছে। নানা সুন্দর সুন্দর কথায় ও নানা রূপে। ইতিমধ্যে বার কয়েক ওলট পালট করে পত্রটি আমার পড়া হয়ে গেল। প্রেমিকা আমাকে না দেখেই আমার কণ্ঠের গান শুনে আমাকে সে কল্পনা করে নিয়েছে আমার নাক কেমন, কেমন আমার চোখ, আমার গায়ের রঙইবা কেমন, ইত্যাদি। তাছাড়া আমার উচ্চতা কত আরো কত কি। এ সবই তার কল্পলোকের কল্পনা। তাই তার চিঠিতে আমার কাছে তার প্রেম নিবেদন করে তার কল্পলোকের প্রেমিককে একবার দেখতে চায়। কোথায় কেমন করে সে আমাকে দেখবে দুটো কথা বলবে এটাই তার প্রস্তাব।
     ট্রাম থেকে নেমে গেলাম গ্রামোফোন কোম্পানীতে দেখা হলো কাজীদার সাথে। আমাকে দেখেই কাজীদা আমাকে বললেন, 'কি রে, কি হয়েছে তোর? তোকে খুব উৎফুল্প মনে হচ্ছে? ব্যাপার কি?' ... 'আমি মুখে কিছু না বলে পকেটে রাখা পত্রটি বের করে কাজীদার হাতে দিলাম। কাজীদা আমার হাত থেকে পত্রটি নিয়ে আদ্যপান্ত পড়লেন। কি ভাবলেন জানিনা। আমাকে হাত ধরে নিয়ে গেলেন তিন তলার খাস কামরায়। কামরায় দরজা বন্ধ করে আমাকে পাশে বসিয়ে কি যেন খসখস করে লিখে চললেন দ্রুত গতিতে। লেখার সাথে সাথে মাঝে মধ্যে গুণগুণ করে সুর ভাজেন আবার লেখেন। শেষ পর্যন্ত রচনা করলেন একটি গান। সুর, তাল,লয় সুসম সমন্বয়ে এনে পরে আমাকে গানটি শেখালেন। গানটি শেখানোর পরে আমাকে বললেন, আমি যেন আমার আগামী বেতারের কোন অনুষ্ঠানে এ গানটি প্রচার করি। সহজ সরল কথা মালায় ও অভিনব সুর সংযোজনায় ভরপুর গানটি আমি কাজীদার নিকট থেকে শিখে নিলাম । আমি আমার পরের বেতার অনুষ্ঠানে এই গানটি প্রচার করি।'

নজরুল ধীরেন দাসের জন্য বা ধীরেন দাসের প্রেমিকার জন্য এই গানটি রচনা করেছিলেন। আসাদুল হকের ধারণা এই গানটি রচিত হয়েছিল ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই-আগষ্ট মাসে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ১-২ মাস।

  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার, ১ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির সাথে কয়েকটি গান প্রকাশের জন্য নজরুলের একটি চুক্তি হয়। এই চুক্তিপত্রে এই গানটির উল্লেখ ছিল।

    এই গানের রচনার উৎস সম্পর্কে জানা যায়- আসাদুল হকের রচিত 'নজরুলের শ্রুতিধর ধীরেন দাস' গ্রন্থ থেকে। এই গ্রন্থের ৫৩ পৃষ্ঠায় ধীরেন দাসের স্মৃতিচারণ অনুসারে উল্লেখ করা হয়েছে।
     
  • রেকর্ড:
    • এইচএমভি  সাথে চুক্তিপত্র। [১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ (বুধবার, ১ আশ্বিন ১৩৪২)]।   পাণ্ডুলিপিতে গানটিr জন্য শিল্পী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলনে নিতাই ঘটক, সুধীর দত্ত এবং মঞ্জু সাহেব। কিন্তু এইচএমভি থেকে কোনো শিল্পীর কণ্ঠে গানটি রেকর্ড হয়েছিল বলে জানা যায় নি।
    • কলাম্বিয়া [ডিসেম্বর ১৯৪৩ (অগ্রহায়ণ ১৩৫০-পৌষ ১৩৫০)। জিই ২৬৪০। শিল্পী: কুমারী কুসুম গোস্বামী। সুর-দুর্গা সেন] [শ্রবণ নমুনা]
       
  • সুরকার: দুর্গা সেন
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রেম
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।