ওমা ফিরে এলে কানাই মোদের এবার ছেড়ে দিস্নে তায় (o maa fire ele kanai moder)
ওমা ফিরে এলে কানাই মোদের এবার ছেড়ে দিস্নে তায়।
তোর সাথে সব রাখাল মিলে বাঁধ্ব সে-ননী চোরায়॥
তা'রে তুই যখন মা রাখতিস্ বেঁধে
ছাড়ায়েছি কেঁদে কেঁদে',
তখন জান্তো কে, যে খুললে বাঁধন পালিয়ে যাবে মথুরায়॥
এবার আমরা এসে ডাকলে শ্যামে গোঠে যেতে দিস্নে তায়,
ঐ পথে অক্রুর মুনির সাথে পালিয়ে যাবে শ্যামরায়॥
মোরা কেউ যাব না বনে মা আর খেল্ব তার এই আঙিনায়,
শুধু খেলব লুকোচুরি লো আগ্লাতে চোরের রাজায়॥
- ভাবসন্ধান: অক্রুরের কাছে সংবাদ পেয়ে কৃষ্ণ গিয়েছিলেন মধুরায়। সেখানে কংসকে হত্যা করে কৃষ্ণ ফিরে এসেছেন ব্রজধামে। তাঁর অবর্তমানে রাখাল বালকেরা সঙ্গহীন সঙ্গীহীন হয়ে অতিবাহিত করেছেন অনেক দিন। এবার রাখালের দৃঢ় প্রতীজ্ঞ যে, তাঁরা আর কৃষ্ণকে যেতে দেবেন না।
তাই রাখাল বালকেরা যশোদার কাছে নিবেদন করেছেন, তিনি এবার কৃষ্ণকে যেন আর ছেড়ে না দেন। তাঁর সাথে রাখাল বালকেরা খেলার বাঁধনে বেঁধে রাখবেন শৈশবের সে ননী-চোরাকে (কৃষ্ণ)। রাখাল বালকেরা যশোদাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন- যখন তিনি দুরন্ত কৃষ্ণকে বেঁধে রাখতেন, তখন তারাই সে বাধন থেকে কৃষ্ণকে ছাড়িয়েছেন কেঁদে কেঁদে। কিন্তু কে জানতো সকল মায়ার বাঁধন খুলে কৃষ্ণ পালিয়ে যাবেন মথুরায়।
রাখালের যশোদাকে স্মরণ করে দিয়ে বলেছেন- এবার যদি তাঁরাও এসে ডাকেন, তিনি যেন শ্যমাকে গোঠে যেতে না দেন। নইলে হয়তো আবার অক্রুরের সাথে পালিয়ে যাবে মধুরায়। কৃষ্ণ পালিয়ে যাবেন বলে বালকেরা তাঁকে নিয়ে খেলার জন্য বনে যাবেন না। চোরের রাজাকে (কৃষ্ণ) আগলাতে তাঁরা বাড়ির আঙিনায় লুকোচুরি খেলবেন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল (চৈত্র ১৩৩৮- বৈশাখ ১৩৩৯) মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩২ বৎসর ১১ মাস।
- গ্রন্থ:
- বনগীতি
- প্রথম সংস্করণ [১৩ অক্টোবর ১৩৩২ (রবিবার ২৭ আশ্বিন ১৩৩৯)]। কীর্ত্তন-ভাঙা। পৃষ্ঠা: ৮১]
- নজরুল-রচনাবলী। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮/মে ২০১১। বনগীতি। গান সংখ্যা ৫৪। কীর্তন-ভাঙা। পৃষ্ঠা ২১০]
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১৩১০। পৃষ্ঠা: ৩৯৭]
- বনগীতি
- রেকর্ড:
- এইচএমভি [এপ্রিল ১৯৩২ (চৈত্র ১৩৩৮- বৈশাখ ১৩৩৯)]। জিটি ১৭। শিল্পী: শিশু মঙ্গল সমিতি
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব। কৃষ্ণলীলা