নীপ-শাখে বাঁধো ঝুলনিয়া (nipo-sakhe baadho jhuloniya)

নীপ-শাখে বাঁধো ঝুলনিয়া,
কাজল-নয়না শ্যামলিয়া॥
মেঘ-মৃদঙ্গ তালে শিখী নাচে ডালে-ডালে।
মল্লার গান গাহিছে পবন পূরবিয়া॥
কেতকী কেশরে কুন্তল করো সুরভি,
পর কদম মেখলা কটি-তটে রূপ-গরবী।
নব-যৌবন জল-তরঙ্গে,
পায়ে পাঁয়জোর বাজুক রঙ্গে
কাজরি ছন্দে নেচে চল করতালি দিয়া॥

  • ভাবার্থ: বর্ষার কাজরি অঙ্গের গানের ভাবাদর্শে এই গানটি রচিত হলেও রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলার পরিবর্তে নিটল বর্ষার রূপ বর্ণনা করা হয়েছে এই গানে। এই গানের নায়িকা বর্ষাকন্যা। বর্ষার শ্যামল বর্ণে রঞ্জিতা এই বর্ষাকন্যাকে কদমের ডালে কাজরি ঝুলন-দোলনা বাঁধার অনুরোধ করেছেন কবি। মূলত স্থায়ীর দুটি পঙ্‌ক্তিতে কবি শৃঙ্গার রসে সিক্ত বর্ষার মিলনোৎসবের আভাস দিয়েছেন। মেঘ-মৃদঙ্গে বাদিত এই উৎসবে বর্ষাকন্যার নৃত্যসঙ্গী ময়ূর। আর পুবালি বাতাস গাইছে মল্লার রাগ।

    নিরাভরণ এই বর্ষানন্দিনীকে এই উৎসবের উপযোগী সজ্জায় সুসজ্জিতা হওয়ার অনুরোধ করছেন। এখানে বর্ষাকন্যা রাধার মতোই নায়িকা। কবির কামনা- প্রেমিকা বর্ষাকন্যা কেতকী কেশরে কেশরাশিকে সুরভিত করে, কটিতে কদমফুলের মেখলা ধারণ করে হয়ে উঠুক রূপ-গর্বিতা। তার নব-যৌবনের জলতরঙ্গে উঠুক নৃত্যানন্দের দোলা, আর কাজরির ছন্দে পায়ে জলতরঙ্গ জলনূপর হয়ে বাজুক।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪২) মাসে , টুইন রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ১ মাস।
     
  • রেকর্ড: টুইন [জুলাই ১৯৩৫ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪২)। এফটি ৪০১৭। শিল্পী: মিস আশালতা]  [শ্রবণ নমুনা]
     
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ইদ্‌রিস আলী [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, চব্বিশতম খণ্ড,  নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা] নবম গান।  [নমুনা]
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, ঋতু, বর্ষা
    • সুরাঙ্গ: কাজরী
    • তাল: তালফেরতা (কাহারবা /দাদরা)
    • গ্রহস্বর: সা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।