পরমাত্মা নহ তুমি মোর (তুমি) পরমাত্মীয় মোর (poromatma noho tumi)

পরমাত্মা নহ তুমি মোর (তুমি) পরমাত্মীয় মোর।
হে বিপুল বিরাট! মোর কাছে তুমি, প্রিয়তম চিতচোর॥
তোমারে যে ভয় করে হে বিশ্বত্রাতা
তার কাছে তুমি রুদ্র দণ্ডদাতা,
প্রেমময় বলে তোমারে যে বাসে ভালো
তার কাছে তুমি মধুর লীলা কিশোর॥
দ্যাখে ভীরু চোখ আষাঢ়ের মেঘে বজ্র তব বিপুল,
মোর মালঞ্চে সেই মেঘে হেরি, ফোটায় নবমুকুল।
আকাশের নীল অসীম পদ্ম পরে
চরণ রেখেছ, হে মহান লীলা ভরে
সেই অনন্ত জানি না কেমন ক’রে
আমার হৃদয়ে খেল দিবানিশি ভোর॥

  • ভাবসন্ধান: পরমসত্তাই পর্মাত্মারূপে বিরাজ করেন কবির হৃদয়ে। কবির হৃদয়াসনে বিরাজিত সে পরমাত্মা বিচ্ছিন্ন কোনো সত্তা নয়, তিনি কবির মনের ঘরে বিরাজ করেন পরম আত্মীয় রূপে। বিপুল বিরাট এই সত্তা কবির হৃদয়হরণকারী প্রিয়তমের মতো।

    পরমাত্মারূপী এই পরমসত্তা জগতের পালক বলে- বিশ্বপাতা। পাপীদের কাছে তিনি ভয়ঙ্কর দণ্ডদাতা। কিন্তু নিষ্কাম প্রেমে যে তাঁকে ভালোবাসে, তার কাছে তিনি হয়ে ওঠেন মধুর লীলাকিশোর।

    আষাঢ়ের মেঘে তাঁর বিপুল বজ্রশক্তি দেখে কেউ ভীরু চোখে তাকায়। কিন্তু কবি সেই মেঘে দেখেন- কবির মনোমালঞ্চে ফোটে নব নব প্রেমের মুকুল।

    মনের নীলাকাশের অসীম হৃদিপদ্মে তিনি বিরাজ করেন লীলাভরে। সেই অনন্ত সত্তা কবির হৃদয়ে বিভোর হয়ে খেলা করেন। কবি সেই রহস্যময় লীলার কারণ জানতে পারেন না। কেমন করে অহর্নিশি সেই আনন্দময় লীলায় তিনি বিহার করেন, কবি তাও জানতে পারেন না।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর (কার্তিক-অগ্রহায়ণ ১৩৪৬) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি এই গানটির একটি রেকর্ড প্রকাশ করেছিল।এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ৫ মাস।
     
  • রেকর্ড: এইচএমভি [নভেম্বর ১৯৩৯ (কার্তিক-অগ্রহায়ণ ১৩৪৬)। এন ১৭৩৮৪। শিল্পী: মাধবী মুখোপাধ্যায়। সুর: নজরুল ইসলাম [শ্রবণ নমুনা]
  • পত্রিকা: ভারতবর্ষ [কার্তিক ১৩৪৭ (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর ১৯৪০)] [নমুনা]
  • গ্রন্থ:
    • নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্‌ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট। তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান ৮২৩। পৃষ্ঠা ২৫২]
    • পটদীপ। নজরুল-সংগীতের স্বরলিপিঃ ৪ নং। স্বরলিপিকার: নিতাই ঘটক। হরফ প্রকাশনী। কলিকাতা। ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৭। ভক্তি ও শক্তি। গান সংখ্যা ১৮। পৃষ্ঠা: ৫২-৫৫।[নমুনা]
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
    • নিতাই ঘটকভারতবর্ষ [কার্তিক ১৩৪৭ (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর ১৯৪০)]  পাদটীকায় উল্লেখ আছে- গানখানির প্রথম লাইনের সুর দিয়াছেন কবি নজরুল ইস্‌লাম্ - বাকী সুর আমার। কুমারী মাধবী মুখোপাধ্যায় এইচ. এম্‌. ভি রেকর্ডে গানখানি গাহিয়াছেন- ইতি স্বরলিপিকার। পৃষ্ঠা:  ৬১৮। [নমুনা]
    • নিতাই ঘটকপটদীপ। নজরুল-সংগীতের স্বরলিপিঃ ৪ নং। হরফ প্রকাশনী। কলিকাতা। ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৭। ভক্তি ও শক্তি। গান সংখ্যা ১৮। পৃষ্ঠা: ৫২-৫৫।[নমুনা]
    • সালাউদ্দিন আহ্‌মেদ। এইচএমভি থেকে প্রকাশিত মাধবী মুখোপাধ্যায়ের রেকর্ডে গীত গানের সুরাবলম্বনে স্বরলিপিটি প্রস্তুত করেছেন। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, পঁচিশতম খণ্ড,  নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। ভাদ্র, ১৪১২/আগস্ট ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ] ১৯ সংখ্যক গান। [নমুনা]
       
  • সুরকার: নজরুল ইসলাম নিতাই ঘটকভারতবর্ষ পত্রিকার কার্তিক ১৩৪৭ (অক্টোবর-নভেম্বর ১৯৪০) সংখ্যায় প্রকাশিত গানের স্বরলিপিকার নিতাই ঘটকের উক্তি অনুসারে জানা যায়, গানটির প্রথম লাইনের সুর করেছিলেন নজরুল ইসলাম। অবশিষ্ট অংশের সুর করেছিলেন নিতাই ঘটক।
     
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমাত্মা
    • সুরাঙ্গ: ভজন
    • তাল: দাদরা
    • গ্রহস্বর:
      • ণা [নিতাই ঘটকের স্বরলিপি]
      • ণধা [সালাউদ্দিন আহ্‌মেদ-এর স্বরলিপি]

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।