ঐ ঘর ভুলানো সুরে কে গান গেয়ে যায় দূরে (oi ghor bhulano sure ke gaan geye jay dure)

রাগ: পিলু-ভৈরবী। তাল: কাহারবা
ঐ ঘর ভুলানো সুরে কে গান গেয়ে যায় দূরে
তার সুরের সাথে সাথে মোর মন যেতে চায় উড়ে॥

        তা'র সহজ গলার তানে
        সে ফুল ফোটাতে জানে,
তা'র সুরে ভাটির-টানে নব জোয়ার আসে ঘুরে ॥

        তা'র সুরের অনুরাগে
        বুকে প্রণয় বেদন জাগ
বনে ফুলেরই আগুন লাগে, ফুল সুধায়ে ওঠে পুরে॥

        বুঝি সুর-সোহাগে ওরি,
        পায় যৌবন কিশোরী
হিয়া বুদ হয়ে গো নেশায় তার পায়ে পায়ে ঘুরে॥

 

  • ভাবসন্ধান: কোন্ সে অচেনা শিল্পী, তার মোহনীয় সুরে গান গেয়ে দূরে চলে যায়। যার সুরের আবেশ মনকে উদাসী করে তোলে, ঘরের বন্ধন থেকে মুক্ত করে ঘর ছাড়ার জন্য উন্মনা করে তোলে। ওই সুরের টানে মন যেন পাখির মতো উড়ে যেতে যায়।

    শিল্পীর সহজ সুরের টানে যেনো সুর ফুলের মতো প্রস্ফুটিত হয়। তাঁর সুরের টানে নিরানন্দ মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। হারিয়ে ফেলা আনন্দ-স্রোতে আনে আনন্দ-প্রবাহ।

    তার সুরের ছোঁয়ায় মনে প্রণয়ের সুতীব্র অনুভূতিময় বেদনার সৃষ্টি করে। মনবনের প্রণয়-পুষ্প যৌবনরাগে উত্তপ্ত সৌরভ ছড়ায়। যেন সে মনপুষ্প যৌবনসুধায় পূর্ণ হয়ে উঠে। তার সুরের আদরে কিশোরী যুবতী হয়ে উঠে। যেন যৌবনমদিরা পান করে নেশায় ঘোরে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। ওই ঘর ভোলানো সুরের টানে যুবতী হয়ে ওঠে কিশোরী এবং সেই যৌবন মদিরার মোহমায়ায় সুর-শিল্পীর অনুগামী হয়ে ঘুরে ফেরে।
  •  রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত 'সুর-সাকী' গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ১ মাস।

    নন্দগোপাল সেনগুপ্তের অনুরোধে নজরুল এই গানটি রচনা করেছিলেন। এ বিষয়ে নন্দগোপাল সেনগুপ্ত লিখেছিলেন-  "আমার ফরমায়েশে তিনি দুটি গান লিখে দিয়েছিলেন একটি পত্রিকায়, পরে দুটিই প্রসিদ্ধ হয়েছে। একটা হলো- 'কুঁচ বরণ কন্যা রে' আর একটা 'ঐ ঘর ভুলানো সুরে'। দুটোরই পাণ্ডুলিপি এখনও আমার কাছে আছে।"
    [সূত্র: নজরুল সঙ্গীত নির্দেশিকা, ব্রহ্মমোহন ঠাকুর (নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। প্রথম সংস্করণ। ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৬। ২৫ম মে ২০০৯)। ৮৪২ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ২২৪-২২৫]
     
  • গ্রন্থ:
    • সুর-সাকী
      • প্রথম সংস্করণ [আষাঢ় ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ। জুলাই ১৯৩২]
      • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, মে ২০১১। সুর-সাকী। ৩২। পিলু-ভৈরবী-কার্ফা। পৃষ্ঠা: ২৪১]
    • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ,[নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। রাগ: পিলু-ভৈরবী, তাল: কাহারবা। গান সংখ্যা ২১৬৯। পৃষ্ঠা: ৬৫৩]
  • রেকর্ড: এইচ.এমভি [মার্চ ১৯৩৩ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৩৯)]। পি ১১৭৬৫। শিল্পী: আঙ্গুরবালা।  [শ্রবণ নমুনা]
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রেম
    • সুরাঙ্গ: গজলাঙ্গ

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।