প্রজাপতি! প্রজাপতি! কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা (projapoti! projapoti! kothay pele bhai)

     প্রজাপতি! প্রজাপতি!
কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা,
টুকটুকে লাল্‌-নীল্‌ ঝিলিমিলি আঁকা-বাঁকা॥
          তুমি টুলটুলে বন-ফুলে মধু খাও
          মোর বন্ধু হয়ে ঐ মধু দাও
ওই পাখা দাও সোনালি-রূপালি পরাগ মাখা॥
মোর মন যেতে চায় না পাঠশালাতে
প্রজাপতি! তুমি নিয়ে যাও সাথি ক'রে তোমার সাথে।
           তুমি হাওয়ায় নেচে নেচে যাও
    আজ  তোমার মত মোরে আনন্দ দাও
এই জামা ভাল লাগে না, দাও জামা ছবি-আঁকা॥

  • ভাবসন্ধান: এই গানটি প্রকৃতি পর্যায়ের জাগতিক বিষয়ভিত্তিক শিশুতোষ গান। বিষয় প্রজাপতি।

    এই গানে কবি শিশু মনস্কতায় প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি প্রজাপতিকে দেখতে চেয়েছেন। প্রজাপতির বর্ণাঢ্য মোহনীয় রূপের অপার মুগ্ধতা শিশু মনে কৌতুহল জাগিয়ে দেয়।  শিশু মনে জেগে ওঠে প্রজাপতির সঙ্গলাভের আকাঙ্ক্ষা। এ গানে কবি শিশুমনস্কতার গভীরতলস্পর্শী  শিশু কবিতে পরিণত হয়েছেন। শিশুর কল্পলোকে বিচরণকারী কবি, তাই শিশুসুলভ মনে প্রজাপতির কাছে জনাতে চেয়েছেন তার টুকটুকে লাল-নীল রঙিন পাখার পাওয়ার গোপন রহস্য।

    বনভূমির ফুলে ফুলে  প্রজাপতি মধু খেয়ে বেড়ায়। তা দেখে শিশু কবির মনে মধুর আস্বাদন নেওয়া সাধ জাগে। তাই সে তার প্রজাপতির বন্ধুর কাছে মধু প্রার্থনা করে। শুধু তাই নয়, সে ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানো পুষ্পরেণুমাখা রঙিন পাখাও চায়, যেন  প্রজাপতির মতো সেও ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াতে পারে।

    শিশু কবি প্রজাপতির মতো আপন মনে ঘুরে বেড়াতে চায়। কিন্তু পাঠাশালার গণ্ডীবদ্ধ জীবনে সে বিতৃষ্ণ। তাই সে প্রজাপতিকে সঙ্গী করে তার মনের রঙিন পাখায় মুক্তানন্দে আপনাকে মেলে দিতে চায়। হাওয়ার ছন্দে নৃত্যানন্দে চলার আনন্দ সে পেতে চায় প্রজাপতির কাছে। প্রজাপতির রঙিন পাখায় মুগ্ধ শিশুকবির কাছে তার নিজের জামা অপাঙ্‌ক্তেয় মনে হয়। তাই সে প্রজাপতির কাছে বর্ণাঢ্য ঝিলিমিল পাখার আবদার করে।
  • রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর ১৯৪২ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪৯) মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪৩ বৎসর ৪ মাস।
     
  • গ্রন্থ:
    • কলগীতি [নজরুল সংগীতের স্বরলিপি : ১৩ নং] § প্রথম প্রকাশ [হরফ প্রকাশনী। ২রা চৈত্র ১৩৭৯ বঙ্গাব্দ। ২৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৭২-৭৫
    • নজরুল গীতি, অখণ্ড
      • প্রথম সংস্করণ [আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। ৬ আশ্বিন ১৩৮৫। ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮]
      • দ্বিতীয় সংস্করণ [আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। ১ শ্রাবণ ১৩৮৮। ১৭ জুলাই ১৯৮১]
      • তৃতীয় সংস্করণ [ব্রহ্মমোহন ঠাকুর সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। ৮ মাঘ ১৪১০। ২৩ জানুয়ারি ২০০৪। কাব্য-গীতি। ৪৭৩ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ১২২-১২৩]
      • পরিবর্ধিত সংস্করণ [আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। বৈশাখ শ্রাবণ ১৪১৩। এপ্রিল-মে ২০০৬] ভৈরবী-গজল। ৪৭৫ সংখ্যাক গান। পৃষ্ঠা: ৯০।
    • নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্‌ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান ৪৬। পৃষ্ঠা ১৫]
    • নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, দ্বিতীয় খণ্ড। স্বরলিপিকার: সুধীন দাশ। প্রথম প্রকাশ, দ্বিতীয় মুদ্রণ [কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। পৌষ ১৪০২। ডিসেম্বর ১৯৯৫। ২১ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ১০২-১০৫]
  • রেকর্ড: এইচএমভি। অক্টোবর ১৯৪২ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪৯)এম.জে ১১৩। শিল্পী অসিতা বসু [শ্রবন নমুনা]
  • সুরকার: কমল দাশগুপ্ত। [ নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, দ্বিতীয় খণ্ড (কবি নজরুল ইন্সটিটিউট)। পৃষ্ঠা ১০২] [[নমুনা] ]
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: সুধীন দাশনজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, দ্বিতীয় খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। ফাল্গুন ১৪১১। ফেব্রুয়ারি ২০০৫। ২১ সংখ্যক গান। [নমুনা]
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ:
      • প্রকৃতি (জাগতিক, পতঙ্গ), শিশুতোষ
    • সুরাঙ্গ:
      • রাগ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
      • তাল: কাহারবা
      • গ্রহস্বর: সা।

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।