ফোটে কমল কেমন করে (fote komol kemon kore)

ফোটে কমল কেমন করে, দেখিতে নিশি ভোরে, আসিনু কমল-বনে।
ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি কোথা হতে আসি গো, হুল ফোটায় অকারণে?
(কেন হুল ফোটায় গো, ফুল ফোটানো স্বভাব ছেড়ে, হুল ফোটায় গো?)
রসভরা শর্বরী বিরস কলহ করি’ ফুরাল।
চাঁদের হাটে এসে, অমৃতের রাধার কাছে, করিনু ভুল কি?
ফাগুনের ফুল ভেবে, পরশ করিনু, বুঝি আগুনের ফুলকি!
[ফাগুনের ফুল (রাগে আগুন হয়েছে গো)]
রাধার প্রেমের মহাভাবে সমাধি হইল পথে –
পাষাণ বিগ্রহ ভেবে, (দলে দলে) নারী এলো কোথা হতে।

সিন্দুর চন্দন দিয়া পূজিল সব পূজারিণী;
কেহ বলে শ্রীনারায়ণ, কেহ বলে শ্যামা ইনি।
রাধা-প্রেমের গুণে মরে যে ছুঁইল হ’ল অবশ।
কেহ নাচে’ কেহ কাঁদে – অপরূপ সে আনন্দ-রস।
চাঁচর-কেশ ঝামর হ’ল, লাগিল কাজল মুখে তাই।
কে নিল কেড়ে বসন-ভূষণ, কিছুই যে মোর মনে নাই!
সবই রাধা-প্রেমের গুণে লো –
(এই নির্গুণ নারায়ণ হ’ল এই কালো রাখাল কালি হ’ল)
কোপ পরিহর গৌরী, ভয়ে মনি হেরিয়া –
গৌরীর মত তেজোময়ী মূরতি।
যদি কলঙ্কী হয়ে থাকি, শুদ্ধ প্রেমে দও
কলঙ্ক ধুয়ে দাও গো –
তোমার চরণে হোক্‌ সুমতি।
যেন রাধা জপমালা হয় শ্রীরাধা তন্ত্র, শ্রীরাধা মন্ত্র, রাধা যোগ, রাধা লয় –
রাধা নামে হই চোর, রাধা নামে কিশোর,
রাধা নামে নিপট কপট হই গো।
রাধা যদি পায়ে ঠেলে, চরণ-পরশ পাইনু বলে,
‘জয় রাধা’ কই গো? জয় শ্রীরাধা, জয় শ্রীরাধা, জয় শ্রীরাধা।

  • রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারি (রবিবার ২৮ পৌষ ১৩৪৭) কলকাতা বেতার থেকে 'কলহ' নামক পালা-কীর্তন প্রচারিত হয়েছিল। এই পালা-কীর্তনে এই গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ৭ মাস।
     
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ২০১৪।  পৃষ্ঠা: ৬০৫-৬০৬]
     
  • বেতার: কলহ। পালা-কীর্তন । কলকাতা-ক। তৃতীয় অধিবেশন। সময়: ৭.৪০-৮.৩৯  [১২ জানুয়ারি ১৯৪১ (রবিবার ২৮ পৌষ ১৩৪৭)।
       [সূত্র:
    • বেতার জগৎ।১২শ বর্ষ ১ম সংখ্যা। ১লা জানুয়ারি ১৯৪১, (বুধবার, ১৭ পৌষ ১৩৪৭)] পৃষ্ঠা: ৪৮
    • The Indian-listener [1940, Vol VI, No 1. page 79

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।