বঁধু কি ক্ষণে হল দেখা (bodhu ki khone holo dekha)

বঁধু কি ক্ষণে হল দেখা
নয়ানে নয়ানে গো যত দেখি তত তৃষ্ণা বেড়ে যায় গো।
নদীর স্রোতের মত এ প্রেম অবিরত
কৃষ্ণ সাগর পানে কাঁদিয়া কাঁদিয়া ধায় গো॥
নদীর এ কূল ভাঙে ও কুল থাকে
বঁধু তোমার প্রেম যাহারে ডাকে
তার দুকূল ভাঙে হায়
অকূলে সে কূল হারায়ে ভেসে যায়।
জ্ঞাতি কুল হারায়ে ভেসে যায় গো।
সে ফেরে না আর ঘরে গো।
নদী স্রেতের মত সে ফেরে না আর ঘরে গো।
বৃন্দাবনের ঘরে পরে যত সবাই নিন্দা করে,
তত কৃষ্ণ প্রেমের ঢেউ ওঠে তার কলঙ্ক সাগরে।
মাধব সবই জানো, কলঙ্কিনী রাধার ব্যথা সবই জানো।
বঁধু হে, ব্রজে, সবাই কৃষ্ণ ভজে একা রাধা কলঙ্কিনী,
সতী সাজে পতির কাছে মনে মনে তোমায়,
পরম পতি তোমায় ভ’জে রাধা হল দ্বিচারিণী।
যার আচারে দুই ভাব নাই হে,
সদা কৃষ্ণ ভাবে বিভোর থাকে সেই রাধা হল দ্বিচারিণী
বঁধু সকলেরে দিলে ঘর সংসার দিলে শ্রীচরণ তরী হে।
রাধার ধরম কিছু রাখিলে না হরি হে।
মোর সেই ত’ ভালো,
গুরু গঞ্জনা দিয়ে তব প্রেমে
হরি যেন বঞ্চনা করো না।
তব কলঙ্ক পসরা বহিব মাথায় করে চন্দ্রাবলীর দল হউক সতী,
জনমে জনমে রাই কলঙ্কিনীর তুমি হয়ো পরম গতি।
মোর কৃষ্ণ বিনোদ বেণী, মোর কৃষ্ণ নয়নমণি কৃষ্ণ নীলাম্বরী অঙ্গে।
কৃষ্ণ কলঙ্কমালা কৃষ্ণ কাঁকনমালা ভাসি ডুবি কৃষ্ণ তরঙ্গে।
মতি দিও হে, যেন কলঙ্কে চন্দন ভাবি
মতি দিও হে, তোমার শ্রীমতীর সুমতি দিও হে
যেন কৃষ্ণপদে মতি থাকে, মতি দিও হে॥

  • রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি (১০ ফাল্গুন ১৩৪৭), কলকাতা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত 'রূপানুরাগ' নামক কীর্তন-পালা'য় এই গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ৯ মাস।
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ২০৩৯ গান। পৃষ্ঠা: ৬১৪।
     
  • বেতার: রূপানুরাগ। পালা-কীর্তন। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি (১০ ফাল্গুন ১৩৪৭), কলকাতা-ক এর তৃতীয় অধিবেশনে রাত ৮ টা থেকে ৮.৩৯ পর্যন্ত প্রচারিত হয়েছিল।
    • সূত্র: বেতার জগৎ। ১২শ বর্ষ ৪র্থ সংখ্যার [পৃষ্ঠা ১৭২, ২১০

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।