মেঘলামতীর ধারা-জলে কর স্নান (হে ধরণী) (meghlamotir dhara-jole koro snan)

    মেঘলামতীর ধারা-জলে কর স্নান (হে ধরণী)
    স্নিগ্ধ শীতল মেঘ-চন্দনে জুড়াও তাপিত প্রাণ (হে ধরণী)॥
            তব     বৈশাখী ব্রত শেষে
                     শ্যাম সুন্দর দেশে
নব   দেবতা এলো হেসে লহ আশিস বারি দান (হে তপসী)॥
            তব ভুষণ-হীন উপবাস ক্ষীণ কায়
            হোক নবতর শ্যাম সমারোহে, পুষ্পিত সুষমায়।
                    তীর্থ-সলিলে কৃষ্ণা
                    দূর কর গো তৃষ্ণা
শ্যাম দরশ পরশ ব্যাকুলা হরষে গাহ গান (হে তপতী)॥

  • ভাবার্থ: বর্ষার আগমনে প্রকৃতিতে যে প্রশান্তি নেমে আসে, তার আস্বাদ গ্রহণের জন্য প্রকৃতিকেই যেন উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এই গানে। গানের স্থায়ীতে ধরণীকে বলা হয়েছে- মেঘলামতী বর্ষার ধারাজলে স্নানে  করুক এবং তপ্তদগ্ধ প্রকৃতি চন্দনের মতো স্নিগ্ধ শীতল মেঘরাশির পরশে যে প্রশান্তি লাভ করুক।  

    অন্তরাতে কবি প্রকৃতিকে অনুরোধ করেছেন- যেন সে বৈশাখের নির্জলা ব্রতের সমাপ্তি টেনে শ্যামসুন্দরের ভুবনে প্রবেশ করে। গ্রীষ্মের দেবতাকে বিদায় জানিয়ে নবদেবতা রূপী বর্ষার বৃষ্টিকে আশীর্বাদ হিসেবে গ্রহণ করে।

    গ্রীষ্মের দীর্ঘ তপস্যায় প্রকৃতি যেন ভূষণহীনা হয়ে যায়, নির্জলা উপবাসে তাঁর অবয়ব ক্ষীণ হয়ে যায়। কবি কামনা করেন, বর্ষার আগমনে শ্যামল-শোভার সমরোহে, পুষ্পিত সুষমায় প্রকৃতি হয়ে উঠুক পরিপূর্ণা।

    আভোগে কবি সূর্যকন্যা তেজস্বী তপতীকে বর্ষার কৃষ্ণানদীর তীর্থ-সলিলে তৃষ্ণা দূর করার অনুরোধ করেছেন। যেন সে তৃষ্ণাতৃপ্ত হয়ে শ্যামল প্রকৃতির স্পর্শ পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে স্নিগ্ধ সঙ্গীতে পরিবেশন করে। মূলত আভোগে তিনি সূর্যের তীব্র দগ্ধরূপকে প্রশমিত দসায় দেখতে চেয়েছেন।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪২) এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড করেছিল। শিল্পী ছিলেন ধীরেন দাস। রেকর্ডটি পরে বাতিল হয়ে যায় এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৩ মাস।
     
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ৪৭৩ সংখ্যক গান। তাল: দাদরা। পৃষ্ঠা: ১৩২।
  • রেকর্ড: এইচএমভি [জুলাই ১৯৩৫ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪২)। এন ৭৩৮৮। শিল্পী: মিস অনিমা (বাদল)। অর্কেস্ট্রা সম্বলিত]  [শ্রবণ নমুনা]
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: রশিদুন্ নবী [নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, ষোড়শ খণ্ড। প্রথম সংস্করণ। নজরুল ইন্সটিটিউট আশ্বিন ১৪০৪/অক্টোবর ১৯৯৩। ১৮ সংখ্যক গান] [নমুনা]
  • সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (ঋতু, বর্ষা)
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
    • তাল:  দাদরা
    • গ্রহস্বর:

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।