যায় ঝিলমিল্ ঝিল্মিল্ ঢেউ তুলে (jay jhilmil jhilmil dheu tule)
যায় ঝিলমিল্ ঝিল্মিল্ ঢেউ তুলে দেহের কূলে
কে চঞ্চলা দিগঞ্চলা মেঘ-ঘন-কুন্তলা।
দেয় দোলা পুব-সমীরণে বনে বনে দেয় দোলা॥
চলে নাগরি দোলে ঘাগরি
কাঁখে বরষা-জলের গাগরি
বাজে নূপুর-সুর-লহরি
রিমি ঝিম্, রিম্ ঝিম্, রিম্ ঝিম্ চল-চপলা॥
দেয়ারই তালে কেয়া কদম নাচে
ময়ূর-ময়ূরী নাচে তমাল-গাছে।
এলায়ে মেঘ-বেণী কাল-ফণি
আসিল কি দেব-কুমারী নন্দন-পথ-ভোলা
- ভাবসন্ধান: এটি প্রকৃতি পর্যায়ের বর্ষার গান। এই গানে কবি বর্ষাকে উপস্থাপন করেছেন- ঘনমেঘ কেশিনী দিগ্বালিকারূপী চঞ্চলা বর্ষাকে। এই গানে কবি বর্ষা-বালিকাকে দিগবালিকার রূপকতায় উপস্থাপন করেছেন।
বর্ষার পুবালি বাতাস বয়ে আনে জলভরা মেঘ। চঞ্চল বালিকার চলার ছন্দে তার অঙ্গে বর্ষণের ঝিলিমলি ঢেউ খেলে যায়। সে ছন্দে দোলায়িত হয় বনরাজি।
বর্ষা যেন জলের কলসে কাঁখে রসিকার দিগ্বালিকা। হাওয়া হাওয়ায় এই রসিকার ঘাঘরা দোলে। বর্ষার রিমঝিম শব্দ যেন তার নূপুর-ধ্বনি হয়ে সুরলহরি তোলে। বর্ষণের তালে নাচে কদম-কেয়া, নাচে তমাল গাছে ময়ূর-ময়ূরী। ঘন কালোমেঘ যেন তার বেণী হয়ে কাল-সাপের মতো এলিয়ে পড়ে। কবির কাছে মনে হয়, এই বরষায় দিগবধূ যেন দেব-কুমারী রূপে স্বর্গের নন্দন কাননের পথ ভুলে ধরাতলে নেমে এসেছে।
- রচনাকাল ও স্থান:গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪১ খ্রিষ্টাব্দ) টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে এই গানের একটি রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৫ বৎসর ছিল ১ মাস।
- রেকর্ড: টুইন। জুন ১৯৩৪ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪১)। এফটি ৩৩২৮। শিল্পী মিস আশালতা[শ্রবণ নমুনা]
- গ্রন্থ: গানের মালা। প্রথম সংস্করণ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ)। গানের মাল ৯৩। ভীমপলশ্রী- কার্ফা।
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: সুধীন দাশ। নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি তৃতীয় খণ্ড(নজরুল ইন্সটিটিউট)। চতুর্থ গান। পৃষ্ঠা ৩৭-৪০] [নমুনা]
- সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম।
- পর্যায়: