রসুল নামের ফুল এনেছি রে (আয়) গাঁথবি মালা কে (rosul namer ful enechhi re)

রসুল নামের ফুল এনেছি রে (আয়) গাঁথবি মালা কে
এই মালা নিয়ে রাখবি বেঁধে আল্লা তালাকে॥
            অতি অল্প ইহার দাম
            শুধু আল্লা রসুল নাম
এই মালা প’রে দুঃখ শোকের ভুলবি জ্বালাকে॥
এই ফুল ফোটে ভাই দিনে রাতে (ভাইরে ভাই) হাতের কাছে তোর
ও তুই কাঁটা নিয়ে দিন কাটালি রে তাই রাত হ’ল না ভোর।
            এর সুগন্ধ আর রূপ ব'য়ে যায়
            নিত্য এসে তোর দরজায় রে
পেয়ে ভাতের থালা ভুললি রে তুই চাঁদের থালাকে॥

  • ভাবসন্ধান: এই গানটিতে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর নাম-বন্দনা করা হয়েছে। এই গানে কবি যেন নবিজীর নাম-বন্দনার মহিমা প্রকাশের ফেরিওয়ালা। তিনি সবাইকে অবগতির জন্য বলছেন- রসুল নামক ফুল এমন এনেছেন, যা দিয়ে রচিত মালার মাধ্যমে আল্লাহকে গভীরভাবে পাওয়া সম্ভব। এই ফুল মূলত নবিজীর দর্শন। এই ফুলকে মানুষ কেন গ্রহণ করে না, এটাই কবির আক্ষেপ। এমন মহিমান্বিত ফুল সবাই গ্রহণ করবেব এটাই তাঁর প্রত্যাশা। তাই তিনি হয়েছেন এই গানের ফেরিওয়ালা।

    আল্লাহ ও রসুলের নামাঙ্কিত এই ফুলের পার্থিব বিনিময় মূল্য খুবই কম। কিন্তু আধ্যত্মিক মূল্য অপরিসীম। এই মালা ধারণ করলে, পার্থিব দুঃখশোকের যন্ত্রণা দূর হয়ে যায়। এই ফুল সর্বদা প্রস্ফুটিত দশায় থাকে এবং হাত বাড়ালেই তা পাওয়া যায়। কিন্তু মানুষ এই ফুলকে গ্রহণ না করে সংসারবৃক্ষের যন্ত্রণা কাঁটার যন্ত্রণা ভোগ করে। তাই এদের দুখের রাত্রির অবসান হয় না।

    প্রতিমুহূর্তে মানুষের দরজায় এই ফুলের সৌন্দর্য ও সৌরভ প্রবাহিত হয়। সাধারণ মানুষ সংসারের সাধারণ ক্ষুধা (ভাতের থাকে) মেটাতে গিয়ে এমন হাতের চাঁদকে (রসুল নামের ফুল) ভুলে থাকে, এটাই কবির আক্ষেপ।

     
  • রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট  (শ্রাবণ -ভাদ্র ১৩৪৮) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি গানটির রেকর্ড প্রকাশ করেছিলে। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪২ বৎসর ২ মাস।
     
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ৭১৬ সংখ্যক গান।
     
  • রেকর্ড: টুইন। আগষ্ট ১৯৪১ (শ্রাবণ -ভাদ্র ১৩৪৮)। এফটি ১৩৬২৯। শিল্পী: দেলোয়ার হোসেন ও আশরাফ আলী। [শ্রবণ নমুনা]

    এর জুড়ি গান-
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: আহসান মুর্শেদ।  নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (ঊনবিংশ খণ্ড)। ২০ সংখ্যক গান] [নমুনা]
  • সুরকার: দেলোয়ার হোসেন (চিত্ত রায়)
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্ম দর্শন। ইসলাম ধর্ম। নাত-এ-রসুল। নামবন্দনা
    • সুরাঙ্গ: ভাটিয়ালি
    • তাল: কাহারবা
    • গ্রহস্বর: সা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।