রিনিকি ঝিনিকি ঝিনিরিনি রিনি ঝিনিঝিনি বাজে (riniki jhiniki jhinirini rinijhini)

রিনিকি ঝিনিকি ঝিনিরিনি রিনি ঝিনিঝিনি বাজে পায়েলা বাজে
নওল কিশোরী ধায় অভিসারে ভবন তেয়াগি’ বন-মাঝে॥
            বারণ করে তায়
            লতিকা ধরি’ পায়
ভাব-বিলাসিনী না মানে গুরুজন-ভয় লাজে॥

আবেশ বিহ্বল এলোমেলো কুন্তল ছায়া-নটিনী চলে
মধুকর গুঞ্জে মাধবী কুঞ্জে কুসুম দীপালি জ্বলে।
           সে রূপ হেরি’ হায়
            মুরলী থামিয়া যায়
পথ-ভোলা শশী কাননে এলো যেন রাধা-সাজে॥

  • ভাবসন্ধান: রাধার অভিসারিকা রূপের বর্ণনা করা হয়েছে এই গানে। নব-যৌবনা রাধা তার ঘর ছেড়ে বনপথ ধরে চলেছে। তার পায়ে নূপুর বাজছে রিনিঝিনি করে।

    রাধার পায়ে লতা জড়িয়ে তার চলার গতিকে স্তিমিত করছে। কবি রূপকতার মধ্যে বলছেন, যেন লতা তাকে এই অভিসারে যেতে বাধা দিচ্ছে। কৃষ্ণের সাথে মিলনের আকাঙ্ক্ষায় সে ঘোরের ভিতরে চলেছে। গুরুজনের ভয় কিম্বা রাতের পথচলার ভয়, লজ্জাকে তুচ্ছ করে কৃষ্ণের মিলনের আকাঙ্ক্ষায় চলছে।

    অভিসারের মোহে সে আবেশিত, চুল এলোমেলো। রাত্রির বনপথের ম্লান আলোয় দেখে মনে হয়, যেনো কোনো ছায়াময়-নৃত্যশিল্পী। মাধবীবনে ভ্রমরের গুঞ্জনে যেমন ফুলবনে সৌন্দর্যের দীপাবলির মতো জ্বলে উঠে, তেমনি রাধার রূপের ছটা বনপথকে উদ্ভাসিত করেছে। দেখে মনে হয় পথ ভুল করে চাঁদই রাধার বেশে অভিসারে এসেছে। আর সেরূপ দেখে, কৃষ্ণের বাঁশীও অকস্মাৎ স্তব্ধ হয়ে গেছে।
  • রচনাকাল ও স্থান:  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে  (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৬), এইচএমভি এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ৩ মাস।
     
  • রেকর্ড: এইচএমভি [সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৬)। এন. ১৭৩৪৬।  শিল্পী: কুমারী দীপালি তালুকদার (ডলি)। ছায়ানট-ত্রিতাল] [শ্রবণ নমুনা]
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:  সুধীন দাশ ও ব্রহ্মমোহন ঠাকুর [নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, অষ্টম খণ্ড নজরুল ইন্সটিটিউট ১২ ভাদ্র, ১৩৯৯ বঙ্গাব্দ/ ২৭ আগষ্ট, ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ। ১৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৯০-৯৩] [নমুনা]
     
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রেম
ঝনন ঝনন ঝনন ননন ঝননন বাজে বিছুয়া বাজে।
পিয়াকে মিলনকো চলী জাত অপনে মন্দরসোঁ বাজে॥
পূজা করনকো নিকসী ঘরসোঁ হো
অলবেলী নার চমকে ‘ইনায়ৎ’ বার বার॥

এ গানটির প্রথম রেকর্ড করেছিলেন আগ্রা ঘরানার ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ। মূল গানটি দুই তুকের। এতে রয়েছে শুধু স্থায়ী ও একটি অন্তরা। নজরুলের গানে রয়েছে চার তুক।

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।