গহীন রাতে ঘুম কে এলে ভাঙাতে (gohin rate ghum ke ele vangate)
রাগ: পিলু, তাল: কাহার্বা।
গহীন রাতে ঘুম কে এলে ভাঙাতে
ফুল-হার পরায়ে গলে দিলে জল নয়ন-পাতে॥
যে জ্বালা পেনু জীবনে
ভুলেছি রাতে স্বপনে
কে তুমি এসে গোপনে ছুঁইলে সে বেদনাতে॥
যবে কেঁদেছি একাকী
কেন মুছালে না আঁখি
নিশি আর নাহি বাকি, বাসি ফুল ঝরিবে প্রাতে॥
- ভাবসন্ধান: 'আলেয়া' নাটকে গান্ধার-রাজ-এর প্রধানা মন্ত্রী কৃষ্ণার প্রধানা গায়িকা কাকলির গান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই গায়িকার কণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে- চিরকালের ব্যর্থ-প্রেমের নারী কৃষ্ণারই মনের কথা।
গভীর রাতে নিদ্রামগ্ন নায়িকার কাছে ঘুমজাগানিয়ে হয়ে আসে তার চিরন্তন নায়ক। সে তার গলায় পরিয়ে দেয় মিলন-বিরহের প্রেম-পুষ্প হার। মানস-নায়কের বিরহজ্বালায় কেটেছে এই এই নায়িকার সারা জীবন। তাই তার অবচেতন মনের আড়াল সরিয়ে, তার স্বপ্ন্-নায়ক যখন তাকে প্রেমময় অন্তরের বিরহ-বেদনাকে গোপনে ছুঁয়ে যায়, তখন সে রাতের স্বপনের মোহে সবকিছু ভুলে যায়।
নায়িকা গভীর অভিমানে বলে- যখন সে সঙ্গহীনা সঙ্গীহীনা হয়ে আসঙ্গলীপ্সায় কেঁদেছে, তখন সে (নায়ক) কেন আঁখিজল মুছিয়ে দেয় নি। রাত্রি শেষে মুছে যায় নায়িকার সকল পাওয়া না-পাওয়ার আনন্দ-বেদনা। ঝরে যায় চিরন্তন নায়কের বাসনা-পুষ্প, প্রভাতের ঝরে পড়া বাসি ফুলের মতো। নাটকের চিরকালের ব্যর্থ-প্রেমের নারী কৃষ্ণা রয়ে যায়, গায়িকা কাকলির সঙ্গীত গাঁথায়।
- রচনাকাল : গানটি রচনার কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ পাওয়া যায় না। ধূপচ্ছায়া এবং সওগাত পত্রিকার ভাদ্র ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। ধারণা করা হয়, গানটি তিনি ১৩৩৫ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাসের শেষে বা ভাদ্রের শুরুর দিকে রচনা করেছিলেন। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২৯ বৎসর ২ মাস।
- পত্রিকা:
- সওগাত। আগষ্ট ১৯২৮ (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৩৫)
- ধূপচ্ছায়া। আগষ্ট ১৯২৮ (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৩৫)
- গ্রন্থ:
- রেকর্ড: এইচএমভি [জুলাই ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দ (আষাঢ় -শ্রাবণ ১৩৩৮) রেকর্ড নং- পি. ১১৭২৪। শিল্পী: ইন্দুবালা] [শ্রবন নমুনা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: সুধীন দাশ। [নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, ষষ্ঠ খণ্ড (নজরুল ইন্সটিটিউট, ফাল্গুন ১৪০৩। ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭)-এর ১০ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৫৮-৬২।] [নমুনা]
- পর্যায়: