অসুর-বাড়ির ফেরত এ মা ( osur-barir ferot e maa)
অসুর-বাড়ির ফেরত এ মা
শ্বশুর-বাড়ির ফেরত নয়।
দশভুজার করিস পূজা
ভুলরূপে সব জগতময়॥
নয় গোরী নয় এ উমা
মেনকা যার খেতো চুমা
রুদ্রাণী এ, এযে ভূমা
এক সাথে এ ভয়-অভয়॥
অসুর দানব করল শাসন এইরূপে মা বারে বারে,
রাবণ-বধের বর দিল মা এইরূপে রাম-অবতারে।
দেব-সেনানী পুত্রে লয়ে মা
এই বেশে যান দিগ্বিজয়ে
সেই রূপে মা’র কর্রে পূজা
ভারতে ফের আসবে জয়॥
- ভাবানুসন্ধান: আদ্যাশক্তি দুর্গাকে- সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিরা বর্ণ করে নওয়ার আয়োজন করে- তাঁর বৎসরান্তে শ্বশুর বাড়ি থেকে পিত্রালয়ে আসার আনন্দোৎসব হিসেবে। প্রকৃত অর্থে মাতৃরূপণী দেবী দুর্গা আসেন- অসুরকে বিনাশ করে বিজয়িনীর বেশে, তাঁর সন্তানদের কাছে। তাই কবি মনে করেন, দশহাতে পাপ-কলুষতা বিনাশিনীকে দেবীকে ভুল ভেবে, শ্বশুর-বাড়ির ফেরত মা হিসেবে পূজা দেওয়া হয়।
এই দুর্গা মেনকা কন্যা আদুরে গৌরী নয়, শিবের তপস্যা ভাঙার দৃঢ়তা দেখানো তাপসিনী উমা নয়। যাকে দেবীমাতা মেনকা, কন্যরূপিণী দেবীকে স্নেহচুম্বনে অভিষিক্ত করেছিলেন। এই দেবী ভয়ঙ্কর শিবের পত্নী রুদ্রাণী এবং সর্বব্যাপিনী আদ্যাশক্তি। এ দেবী একই সাথে ভয়া এবং অভয়া।
এই দেবী বার বার অসুর ও দানবদেরকে পরাজিত করে জগৎকে রক্ষা করেছেন। এই দেবীই রাম-রাবণের যুদ্ধে বিষ্ণুর অবতার রামকে- রাবণকে বধ করার বর দিয়েছিলেন। তিনি দেব-সেনানায়ক পুত্র কার্তিক নিয়ে দিগ্বিজয়ে যান এবং বিজয়িনী হয়ে ফিরে আসেন। কবি চান ভারতের ঘরে ঘরে এই দেবী পাপ-বিনাশিনী রূপে পূজিতা হোন। তাহলেই পরাধীন ভারতে আবার বিজয়ের ধারা ফিরে আসবে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪০) মাসে, টুইন রেকর্ড থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৪ বৎসর ১ মাস।
- রেকর্ড: টুইন [জুলাই ১৯৩৩ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৩৯)। এফটি ২৮২১। মাস্টার কমল [শ্রবণ নমুনা]
- গ্রন্থ:
- গীতি-শতদল।
- প্রথম সংস্করণ [বৈশাখ ১৩৪১ খ্রিষ্টাব্দ] ৮২ সংখ্যক গান। ভৈরবী-একতালা।
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংকলন। পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১। গীতি-শতদল। গান সংখ্যা ৮২। ভৈরবী-একতালা। পৃষ্ঠা ৩৩১]
- রাঙা জবা। কাজী নজরুল ইসলাম। প্রথম সংস্করণ। হরফ প্রকাশনী, কলিকাতা [১৪ এপ্রিল ১৯৬৬)। ১লা বৈশাখ ১৩৭৩] গান সংখ্যা ৫৩। পৃষ্ঠা: ৬১।
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১০১৯]
- গীতি-শতদল।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:আহসান মুর্শেদ [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি ছেচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট । ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি ২০১৯] পৃষ্ঠা: ১৭-১৯। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষায়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতম হিন্দুধর্ম। শাক্তসঙ্গীত। দুর্গাপূজা। উদ্দীপনা
- সুরাঙ্গ: ভজন
- রাগ: ভৈরবী (রাগ)
- তাল: একতাল [স্বরলিপিতে তালের ছন্দোবিভাজনে ভুল আছে।]
- গ্রহস্বর: সা