ইয়া মোহাম্মদ, বেহেশত্‌ হতে খোদায় পাওয়ার পথ দেখাও
এই দুনিয়ার দুঃখ থেকে এবার আমায় নাজাত দাও॥
পীর মুর্শীদ পাইনি আমি, তাই তোমায় ডাকি দিবস-যামী,
তোমারই নাম হউক হজরত আমার পরপারের নাও॥
অর্থ-বিভব-যশ-সম্মান চেয়ে চেয়ে নিশিদিন
দুঃখে শোকে জ্ব'লে মরি পরান কাঁদে শ্রান্তিহীন।
আল্লা ছাড়া ত্রিভুবনে, শান্তি পাওয়া যায় না মনে
কোথায় পাব সে আবহায়াত ইয়া নবীজী রাহ্ বাতাও॥

• ভাবসন্ধান: এ গানটি মুর্শিদী ভাবধারায় রচিত হয়েছে। এই গানের মুর্শিদ তথা শিক্ষাগুরু হলেন হজরত মুহম্মদ (সাঃ)। যাপিত জীবনের সকল দুঃখ-বিনাশী আবহায়াতের (অমৃতবারি) সন্ধান পাওয়ার জন্যই রচিত হয়েছে এই গানটি।
  
  মুসলমানরা মনে করেন যে, নবি দেহত্যাগের পর তাঁর রুহ বেহেশতে অবস্থান করছেন। তাই তাঁর মুরিদ তথা উম্মতের প্রার্থনা বেহেশত থেকে- তিনি যেন খোদার কাছ থেকে পাওয়া বেহেশতের পথের সন্ধান দেন। যাতে এই দুনিয়ার সকল দুঃখ থেকে কবি নাজাত (মুক্তি) লাভ করতে পারেন। কবি এখানে নাজাত শব্দের দ্বারা  পাপ-পঙ্কিলতা, গুনাহ ইত্যাদি থেকে মুক্তির কথা বলেছেন।
  
  কবি অন্য কোনো পীর মুর্শিদের দ্বারস্থ না হয়ে, অহর্নিশি শুধু নবীকেই স্মরণ করেছেন। তাঁর প্রত্যাশা এবং বিশ্বাস, নবির নামই হয়ে উঠবে তাঁর বেহেশতে যাবার তরণী।
  
  কবি তাঁর যাপিত জীবনে নিশিদিন অর্থ-বিভব-যশ-সম্মান চেয়ে শুধু দুঃখ শোকই পেয়েছেন। এই যাতনায় তিনি শ্রান্তিহীন (অবিরাম) কেঁদছেন। এবার তিনি এই দুর্দশা থেকে মুক্তি চান। তিনি জানেন আল্লাহ ছাড়া কেউ শান্তি দিতে পারেন না।  কোথায় সেই আল্লাহর দেওয়া শান্তিপ্রদায়ী আবহায়াত (অমৃতবারি), যা শুধু মানুষকে অমর করে না, সাথে সকল দুঃখের অবসান ঘটায়। এই আবহায়াতের রাহ্ (পথ) সন্ধান একমাত্র দিতে পারেন নবিজি।  তাই সে পথের সন্ধান পাওয়ার জন্য নবিজির কাছে এই প্রার্থনা।
   
• রচনাকাল : গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই (আষাঢ়- শ্রাবণ ১৩৪৭) মাসে  মেগাফোন রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ১ মাস।
   
• রেকর্ড: মেগাফোন। জুলাই ১৯৪০ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪৭)। জেএনজি ৫৪৮৭। শিল্পী: ফুল মোহাম্মদ [শ্রবণ নমুনা]
• স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: রশিদুন্‌ নবী। নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (বিংশ খণ্ড)। [কবি নজরুল ইন্সটিটিউট] তৃতীয় গান [নমুনা]
• পর্যায়:
  • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামি গান। নাত-এ রসুল
  • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
  • তাল: তাল: কাহারবা
  • গ্রহস্বর: র্সা