(সখি) ব'লো বঁধুয়ারে নিরজনে (sokhi bolo bodhuare nirojone)

(সখি) ব'লো বঁধুয়ারে নিরজনে
দেখা হ'লে রাতে ফুল-বনে॥
কে করে ফুল চুরি জেনেছে ফুলমালী
কে দেয় গহীন রাতে ফুলের কুলে কালি
জেনেছে ফুলমালী গোপনে॥
ও-পথে চোর-কাঁটা, সখি, তায় বলে দিও
বেঁধে না বেঁধে না লো যেন তার উত্তরীয়।
এ বনফুল লাগি' না আসে কাঁটা- দলি'
আপনি যাব চলি' বঁধুয়ার কুঞ্জ-গলি
বিনা মূলে বিকাইব ও-চরণে॥

  • ভাবার্থ: টপ্পা-ঠুমরী মিশ্র অঙ্গের এই গানে ফুটে উঠেছে প্রিয়তমের সাথে মিলনের আকাঙ্ক্ষা, অভিমান এবং প্রণয় ঈর্ষার অপূর্ব মিশ্রণ।এই গানটির বাণীতে একই সাথে পাওয়া যায় যৌবনের তীব্র কামনা এবং প্রত্যাখ্যানের অভিমানী করুণরূপ। ফলে উভয়ের মিশ্রণে বাণীতে ফুটে ওঠে শৃঙ্গার এবং করুণার মিশ্র রসানুভূতি। সুরের চলনেও রয়েছে বাঈজীর পেশাদারী ভঙ্গিমা। যেখান রয়েছে শৃঙ্গারের লীলায়িত আহ্বান এবং না পাওয়ার বেদনাজাত অভিমান। গানের শুরুতে নায়িকা তার সখিকে ডেকে বলছে- রাত্রির গোপন অভিসারে যদি তার প্রিয়তমের সাথে দেখা হয়,তাহলে সে যেন- এই বিরহবিধুর নায়িকার কথা বলে।

    অন্তরাতে এসে অভিমানী নায়িকার প্রকাশ ঘটে, ঈর্ষান্বিতা হয়ে। প্রেমের অভিসারে কে নায়িকার মন হরণ করে, কে গভীর রাতের কুল-কন্যাকে কলঙ্কিনী করে, এ কথা প্রেমিক সংগোপনে জেনেছে।

    প্রেমের অভিসারের চোরা কাঁটায় ভরা। সেখানে শাশ্বত প্রেম নেই। প্রেমিকার কামনা করেন ওই প্রতারণার চোরাকাঁটায় তাঁর প্রেমের উত্তরীয় বিদ্ধ করে। সখিকে অনুনয় করে নায়িকা বলে, তার প্রিয়তম যদি একান্তই না আসে, তবে সে নিজেই প্রিয়তমের কুঞ্জে যাবে এবং কোনো প্রতিদানে আশা না রেখেই নিজেকে প্রিয়তমের কাছে সমর্পণ করবে।

     
  • রচনা ও প্রকাশ কাল। গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। সওগাত পত্রিকার ‌চৈত্র ১৩৩৪ (মার্চ-এপ্রিল ১৯২৮) সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২৮ বৎসর ১০ মাস।
     
  • গ্রন্থ:
    • নজরুল গীতিকা
      • প্রথম সংস্করণ [১৬ ভাদ্র ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ। মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ১৯৩০। ঠুংরী। ১৪। খাম্বাজ-দাদরা। পৃষ্ঠা ৫৬]
      • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। তৃতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ঢাকা ফাল্গুন ১৪১৩/মার্চ ২০০৭] নজরুল গীতিকা। ৪৪। ঠুংরী। খাম্বাজ-দাদরা। পৃষ্ঠা: ২০২]
    • নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্‌ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮] গান ৬। পৃষ্ঠা ২
    • নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি
      • প্রথম খণ্ড।  স্বরলিপিকার: সুধীন দাশ। প্রথম প্রকাশ, তৃতীয় মুদ্রণ [কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। অগ্রহায়ণ ১৪০২। নভেম্বর ১৯৯৫। ষষ্ঠ গান] [নমুনা]
      • আটচল্লিশতম খণ্ড। স্বরলিপিকার: ইদ্‌রিস আলী। [কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, কার্তিক ১৪২৬। নভেম্বর ২০১৯। পৃষ্ঠা:  ১০০-১০৫] [নমুনা]
    • নজরুল সুরমালিকা-২  প্রথম প্রকাশ [ব্রহ্মমোহন ঠাকুর সম্পাদিত। ডি. এম. লাইব্রেরী। জ্যৈষ্ঠ ১৪১০। মে ২০০৩] ২০ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৫২-৫৫
    • বুলবুল
      • প্রথম সংস্করণ [কার্তিক ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ (নভেম্বর ১৯২৮)। গান ১৯।বিহারী খাম্বাজ মিশ্র-দাদ্‌রা]
      • নজরুল-রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ফাল্গুন ১৪১৩। ফেব্রুয়ারি ২০০৭। বুলবুল। গান ১৯।  বিহারী খাম্বাজ মিশ্র-দাদ্‌রা। পৃষ্ঠা: ১৬৬]
    • সুর-মুকুর
      • [নজরুল ইন্সটিটিউট, ভাদ্র ১৪১০। আগষ্ট ২০০৩। ৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ১৮-২৪]  [নতুন
      • সংস্করণের পুনর্মুদ্রণ। ডি. এম. লাইব্রেরী, জ্যৈষ্ঠ ১৪০৬। মে ১৯৯৯] ৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ২১-২৭
  • রেকর্ড:
    • এইচএমভি  [আগষ্ট ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দ (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৩৫)। পি ১১৫০৯। শিল্পী উমাপদ ভট্টাচার্য।]
    • এইচএমভি  [সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪১)। এন ৭২৬৮। শিল্পী ইন্দুবালা । সুর: নজরুল ইসলাম। মিশ্র খাম্বাজ। শ্রেণী-গজল। [শ্রবণ নমুনা]
  • পত্রিকা:
    • সওগাত। ‌চৈত্র ১৩৩৪ (মার্চ-এপ্রিল ১৯২৮)
    • সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা। আশ্বিন ১৩৩৫ (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৫)। স্বরলিপিকার: নলিনীকান্ত সরকার। মিশ্র বেহাগ-দাদরা (গজল)।
       
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রেম
    • সুরাঙ্গ: ঠুমরী [স্বরলিপিতে গজল উল্লেখ আছে। নজরুল-গীতিকায় গানটিকে ঠুংরী শ্রেণিতে রাখা হয়েছে]
    • রাগ:
      • রাগ:
        • খাম্বাজ [নজরুল-সংগীত সংগ্রহ (রশিদুন্‌ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট)] পৃষ্ঠা ২
        • মিশ্র বেহাগ [সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা (পত্রিকা)। আশ্বিন, ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ (স্বরলিপি-সহ)]
      • তাল: দাদরা
      • গ্রহস্বর:
        • ধ্   সুধীন দাশ-কৃত স্বরলিপি]
        • গ্   ইদ্‌রিস আলী-কৃত স্বরলিপি]

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।