উল্টে গেল বিধির বিধি (দে গরুর গা ধুইয়ে) (ulte gelo bidhir bidhi)
দে গরুর গা ধুইয়ে॥
উল্টে গেল বিধির বিধি আচার বিচার ধর্ম জাতি,
মেয়েরা লড়ুই করে, মদ্দ করেন চড়ুই-ভাতি!
পলান পিতা টিকেট ক’রে –
খুশি তাঁহার পিকেট করে!
গিন্নী কাটেন চর্কা, - কাটান কর্তা সময় গাই দুইয়ে!
কোরাস্ : দে গরুর গা ধুইয়ে॥
চর্মকার আর মেথর-চাঁড়াল ধর্মঘটের কর্ম-গুরু!
পুলিশ শুধু কর্ছে পরখ্, কার কতটা চর্ম পুরু!
চাটুয্যেরা রাখছে দাড়ি,
মিঞারা যান নাপিত-বাড়ি!
বোঁট্কা-গন্ধী ভোজপুরী কয় বাঙালীকে – ‘মৎ ছুঁইয়ে!’
কোরাস্ : দে গুরুর গা ধুইয়ে॥
মাজায় বেঁধে পৈতে বামুন রান্না করে কার না বাড়ি,
গা ছুঁলে’ তার লোম ফেলে না, ঘর ছুঁলে’ তার ফেলে হাঁড়ি।
মেয়েরা যান মিটিং হেদোর,
পুরুষ বলে, ‘বাপ্ রে দে দোর!’
ছেলেরা খায় লাপ্সি-হুড়ো, বুড়োর পড়ে ঘাম চুঁইয়ে!
কোরাস্ : দে গরুর গা ধুইয়ে॥
ভয়ে মিঞা ছাড়ল টুপি, আঁটল কষে গোপাল-কাছা,
হিন্দু সাজে গান্ধী-ক্যাপে, লুঙ্গী পরে ফুঙ্গী চাচা!
দেখ্লে পুলিশ গুঁতোয় ষাঁড়ে
পুরুষ লুকায় বাঁশের ঝাড়ে!
নাক কাটা হয রায় বাহাদুর, খান্ বাহাদুর কান খুইয়ে॥
কোরাস্ : দে গরুর গা ধুইয়ে॥
খঞ্জ নেতা গঞ্জনা দেয়, চ’লতে নারে দেশ যে সাথে!
টেকো বলে, ‘টাক ভালো হয় আমার তেলে, লাগাও মাথে!’
‘কি গানই গায়-ব’লছে কালা,
কানা কয়, ‘কি নাচছে বালা!’
কুঁজো বলে, ‘সোজা হ’য়ে শুতে যে সাধ, দে শুইয়ে।’
কোরাস : দে গুরুর গা ধুইয়ে॥
সস্তা দরে দস্তা-মোড়া আসছে স্বরাজ বস্তা-পচা,
কেউ বলে না ‘এই যে লেহি’ আসলে ‘যুদ্ধ দেহি’র খোঁচা’।
গুণীরা খায় বেগুন-পোড়া,
বেগুন চড়ে গাড়ি ঘোড়া!
ল্যাংড়া হাসে ভেংড়ো দেখে’ ব্যাঙের পিঠে ঠ্যাং থুইয়ে!
কোরাস্ : দে গরুর গা ধুইয়ে॥
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ,[নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ২৫৭৯]